আলুর ট্রাক আটকে মার ব্যবসায়ীকে, অভিযুক্ত পুলিশ

ভিন্ রাজ্যে নয়। এ রাজ্যের মধ্যেই ট্রাকে আলু নিয়ে যাচ্ছিলেন বাঁকুড়ার এক আলু ব্যবসায়ী। সেই ট্রাক আটকে ওই ব্যবসায়ীকে হেনস্থা ও মারধরের অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে।রবিবার পুরুলিয়া মফস্সল থানার ছড়রা এলাকার কাছে, পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের উপরে এই ঘটনা ঘটেছে। বাঁকুড়ার জয়পুর থানার গেলিয়ার বাসিন্দা ঘনশ্যাম কুণ্ডু নামের ওই ব্যবসায়ী প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির গেলিয়া শাখার সম্পাদক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:২১
Share:

হাসপাতালের পথে ঘনশ্যাম কুণ্ডু। ছবি: সুজিত মাহাতো

ভিন্ রাজ্যে নয়। এ রাজ্যের মধ্যেই ট্রাকে আলু নিয়ে যাচ্ছিলেন বাঁকুড়ার এক আলু ব্যবসায়ী। সেই ট্রাক আটকে ওই ব্যবসায়ীকে হেনস্থা ও মারধরের অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে।

Advertisement

রবিবার পুরুলিয়া মফস্সল থানার ছড়রা এলাকার কাছে, পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের উপরে এই ঘটনা ঘটেছে। বাঁকুড়ার জয়পুর থানার গেলিয়ার বাসিন্দা ঘনশ্যাম কুণ্ডু নামের ওই ব্যবসায়ী প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির গেলিয়া শাখার সম্পাদক। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে আলু ব্যবসায়ীদের মধ্যে। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বরেন মণ্ডলের অভিযোগ, “বৈধ কাগজ নিয়ে ওই ব্যবসায়ী পুরুলিয়ায় আলু নিয়ে যাচ্ছিলেন। পুলিশ তাঁকে আটকে মিথ্যা অভিযোগে মারধর করেছে।” তিনি জানান, আজ সোমবার, তাঁরা এ ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রাজ্য কমিটির বৈঠক ডেকেছেন। পুলিশ অবশ্য হেনস্থা-মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঘনশ্যামবাবু জানান, ৪০০ বস্তা আলু নিয়ে তিনি ঝাড়খণ্ড লাগোয়া পুরুলিয়ার ঝালদায় যাচ্ছিলেন। ছড়রার কাছে পুলিশ তাঁর গাড়ি আটকে কাগজপত্র (চালান) দেখতে চায়। তাঁর দাবি, “আলু নিয়ে যাওয়ার কাগজপত্র দেখিয়ে আমি বলি, ঝালদায় আলু যাচ্ছে। কিন্তু পুলিশকর্মীরা জানান, আমি নাকি মিথ্যা বলছি। আমি তাঁদের বোঝাতে গেলে উল্টে এক পুলিশকর্মী আমার হাতের তালুতে লাঠির ঘা মারে। প্রতিবাদ জানালে দু’হাতে লাঠি মারে।” ওই ব্যবসায়ীর আরও অভিযোগ, ঘটনাস্থলে এক পুলিশকর্তা ছিলেন। তাঁর কাছে প্রতিকার চেয়েও পাওয়া যায়নি। আলুর গাড়ি পুলিশ আটকে রাখে।

Advertisement

ঘনশ্যামবাবু বাঁকুড়ায় প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির কর্তাদের ফোন করে সব জানান। তাঁদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুরুলিয়া পাইকারি আলু ব্যবসায়ী সমিতির কিছু সদস্য ঘটনাস্থলে যান। ওই ব্যবসায়ী সমিতির অন্যতম কর্মকর্তা গৌর সেন বলেন, “আমাদের দেখেই পুলিশ আলু বোঝাই গাড়ি ঝালদার উদ্দেশে রওনা করিয়ে দেয়।” পরে তাঁরা ঘনশ্যামবাবুকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বাঁকুড়া প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বিভাস দে-র ক্ষোভ, “কোনও কারণে সন্দেহ হলে পুলিশ আলুর গাড়ি আটকাতে পারত, তা বাজেয়াপ্তও করতে পারত। কিন্তু এক জন ব্যবসায়ীকে মারধর করার অধিকার পুলিশকে কে দিয়েছে? এর পরে রাজ্যেই মধ্যেই আলু পাঠাতে ব্যবসায়ীরা রাজি না হলে যে অস্থিরতা তৈরি হবে, পুলিশ কি তা সামাল দেবে?”

রাতে তাঁরা পুরুলিয়া হাসপাতালে ঘনশ্যামবাবুর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে বিভাসবাবু দাবি করেন, “ঘনশ্যাম আমাদের জানিয়েছেন, তাঁকে ইলেকট্রিকের শক্ দিয়ে অত্যাচার করেছে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে আমরা এ কথা জানাব।” যদিও পুরুলিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভটাচার্যের দাবি, “আলু ব্যবসায়ীকে মারধর করা হয়েছে, এমন কোনও অভিযোগ আমার কাছে নেই।”

অন্য দিকে, শনিবার রাত ১০টা নাগাদ বীরভূমের মহম্মহদবাজারের কুলকুড়ি রাস্তা দিয়ে ঝাড়খণ্ডে পাঠানোর চেষ্টার অভিযোগে ৮টি আলু ভর্তি ট্রাক আটকান স্থানীয় বাসিন্দারা। রাতেই পুলিশ ট্রাকগুলি আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের দাবি, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে আলু কুলকুড়ি হয়ে ঝাড়খণ্ডে পাঠানো হচ্ছিল। মহম্মহদবাজারের বিডিও সুমন বিশ্বাস বলেন, “জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন