Amphan Relief

আমপান ত্রাণ তদন্ত শুরু করতে চায় সিএজি

কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)-কে আমপানের ত্রাণ বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:২৪
Share:

—ফাইল চিত্র

সংক্রান্তি কাটিয়েই আমপানের ত্রাণে অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত শুরু করতে চেয়েছে সিএজি। নবান্নের বক্তব্য, আরও কিছু দিন অপেক্ষা করুক হিসাবরক্ষক সংস্থা।

Advertisement

ডিসেম্বরের গোড়ায় কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)-কে আমপানের ত্রাণ বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তিন মাসের মধ্যে সেই তদন্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণন। আদালতের রায় মেনে জেলায় জেলায় ঘুরে আমপানের ত্রাণ বিলির অডিট করতে চায় সিএজি। আগামী কাল, ১৬ জানুয়ারি থেকেই সেই কাজ শুরু করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে তারা।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে নবান্ন সিএজি’কে জানিয়েছিল, আমপানে ত্রাণ-দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় রিভিউ পিটিশন দায়ের করেছে সরকার। সেই মামলার শুনানি হয়নি। বিষয়টি বিচারাধীন। তাই সিএজি বরং আদালতে মামলা নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষা করুক। সিএজি’র এক কর্তার কথায়, ‘‘কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ তিন মাসের মধ্যে দুর্নীতি বা অনিয়মের তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে। তার মধ্যে দেড় মাস কেটেই গিয়েছে। রাজ্য সরকার রায়ের উপর দু’বার স্থগিতাদেশ চেয়েও পায়নি। ফলে সিএজি’র তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে অসুবিধা নেই। তিন মাসের মধ্যে সিএজি কোনও পদক্ষেপ না-করলে তা আদালত অবমাননার শামিল। অন্য দিকে, রাজ্য সরকার যদি তিন মাসের মধ্যে এই তদন্ত শুরু করতে না-দেয়, তা হলে সিএজি আদালতে গিয়ে অবমাননার মামলা করতে পারে।’’

Advertisement

নবান্নের কর্তারা জানাচ্ছেন, রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী জাভেদ খান সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি যে দিন নবান্নে এসে অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন, তার পরই তাঁর সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ফলে বিপর্যয় মোকাবিলা সচিব দুষ্যন্ত নারিয়ালা-সহ সমস্ত সিনিয়র আমলারা এখন ‘কোয়রান্টিনে’ রয়েছেন। এই পরিস্থিতি না কাটলে সিএজি’কে অডিট করতে দেওয়া সম্ভব নয়।

সরকারি সূত্রের খবর, সিএজির লোকাল অডিট (ইএলএ) শাখা এই তদন্ত করবে। এই শাখা মূলত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলির বার্ষিক অডিট করে থাকে। আমপানে ত্রাণের খাতে কেন্দ্রীয় সরকার ১০০০ কোটি টাকা অগ্রিম পাঠিয়েছিল। বিরোধীদের অভিযোগ, কিছু ক্ষেত্রে প্রকৃত উপভোক্তাদের পরিবর্তে ত্রাণ পেয়েছে শাসক-ঘনিষ্ঠরা। আবার কিছু ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয়স্বজনেরাও টাকা তুলে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাগুলি সামনে আসায় পুলিশ-সহ বিভিন্ন স্তরে উপভোক্তাদের তালিকা যাচাই করায় সরকার। বহু জায়গায় টাকা ফেরত দিতেও বাধ্য করে প্রশাসন। তার পরেও ত্রাণ নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ কমেনি। হাইকোর্ট সেই অভিযোগের তদন্তে সিএজি’কে নির্দেশ দিয়েছিল।

সিএজি-র অন্দরের অভিযোগ, অডিট করতে দিতে প্রশাসন টালবাহানা করছে। প্রশাসনের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, পিএমকেয়ার্স তহবিল নিয়ে এত অভিযোগ থাকলেও তদন্ত হচ্ছে না কেন? কেন সবার চোখ শুধু আমপানের ত্রাণ বিলি নিয়ে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন