বিজেপির যাত্রা-ভঙ্গ

শুক্রবার বেলা দশটায় কোচবিহার থেকে ওই যাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৭
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

বিজেপির ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’ (রথযাত্রা) পিছিয়ে দিতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আজ, শুক্রবার বেলা দশটায় কোচবিহার থেকে ওই যাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দিনভর শুনানির পরে বিকেলে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী জানান, এত কম সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। গত জানুয়ারিতে সাত দিন মোটরবাইর র‌্যালি করেছিল বিজেপি। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, তখনকার পরিস্থিতি আর এখনকার পরিস্থিতি এক নয়। এ বার যাত্রার মেয়াদও বেশি। ৭ ডিসেম্বর থেকে ১৬ জানুয়ারি। কোচবিহারে অপ্রীতিকর ঘটনা বা জীবনহানি ঘটলে তার দায় বিজেপির জেলা সভাপতি নেবেন কিনা, সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিচারপতি।বিচারপতি চক্রবর্তী এ দিন রাজ্যের সব জেলার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁদের জেলার রথযাত্রা নিয়ে বিজেপির সংশ্লিষ্ট সভাপতি বা সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করতে। বৈঠকের পরে যা সিদ্ধান্ত হবে, তা সভাপতি বা সম্পাদককে জানিয়ে দিতে হবে। ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করতে হবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্য এবং বিজেপি তাদের বক্তব্য জানিয়ে হলফনামা পেশ করবে। পরবর্তী শুনানি হবে ৯ জানুয়ারি।

এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্তের কাছে যান বিজেপির আইনজীবীরা। রাতেই আপিল মামলার শুনানির আবেদন জানান তাঁরা। সূত্রের খবর, প্রধান বিচারপতি তাঁদের জানিয়েছেন, আজ, শুক্রবার সকালে শুনানি হবে। হাইকোর্ট সূত্রে বলা হচ্ছে, বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হতে পারে।

Advertisement

রথযাত্রায় প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে ৩০ নভেম্বর মামলা করে বিজেপি। বুধবার অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত আদালতে জানান, যাত্রা নিয়ে রাজ্যের সিদ্ধান্ত তিনি বৃহস্পতিবার সকালে জানাবেন। এ দিন কোচবিহারের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের পৃথক দু’টি রিপোর্ট আদালতে পেশ করে তিনি জানান, জেলা প্রশাসন যাত্রার অনুমতি দেয়নি। যাত্রা হলে কোচবিহারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন পুলিশ সুপার। যাত্রায় যোগ দিতে ভিন্‌ রাজ্য থেকে আসা লোকজনের জন্য আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলেও রিপোর্টে বলা হয়েছে। বিজেপির আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র ও সপ্তাংশু বসু প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কেবল আশঙ্কার কারণে যাত্রার অনুমতি দেওয়া হবে না? সুপ্রিম কোর্ট তো অনেক আগেই জানিয়েছে, সভা, সমাবেশ, মিছিলের অধিকার অস্বীকার করা যায় না।’’

এজি বলেন, কোচবিহারের এসপি স্বরাষ্ট্র দফতরকে জানিয়েছেন, তাঁর জেলা স্পর্শকাতর। সেখানে সাম্প্রদায়িক হানাহানির ইতিহাস রয়েছে। তা শুনে বিচারপতি অনিন্দ্যবাবুর উদ্দেশে বলেন, ‘‘যাত্রা চলাকালীন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে কী হবে?’’ অনিন্দ্যবাবু বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজ্যের। যাত্রা কোন পথে যাবে, কত লোক অংশ নিতে পারবে, সে সব পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করতে বলুক আদালত।

এজি পাল্টা বলেন, পুলিশ আইনে বলা আছে, সভা, মিছিলের জন্য অনুমতি নিতে হবে। বিজেপি অনুমতির অপেক্ষা না করে নিজেরাই যাত্রাপথ ঠিক করে পুলিশকে শুধু জানিয়েছে। তিনি আরও জানান, জেলা আধিকারিকেরা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার বিচার করা আদালতের উচিত হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন