২৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বাকে গর্ভপাতে অনুমতি দিল না হাইকোর্ট

চলতি মাসের গোড়ায় ওই মহিলা জানতে পারেন, তাঁর গর্ভস্থ ভ্রূণটির জটিলতা রয়েছে। শিশুটি ভূমিষ্ঠ হবে ‘ডাউন সিন্ড্রোম’ নিয়ে। গর্ভধারণের ২৫ সপ্তাহের মাথায় তিনি গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪১
Share:

বেলেঘাটার বাসিন্দা, ২৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বাকে গর্ভপাত করানোর অনুমতি দিল না কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী মঙ্গলবার জানিয়েছেন, বর্তমানে মহিলার গর্ভধারণের তৃতীয় ও শেষ পর্যায় চলছে। গর্ভস্থ ভ্রূণের হাত, পা, পায়ের পাতা ও মাথা আকার নিয়ে ফেলেছে। ভ্রূণটি জীবন্ত। এই অবস্থায় মায়ের প্রতি সহানুভূতি জানিয়েও ভ্রূণটির বাঁচার অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না।

Advertisement

চলতি মাসের গোড়ায় ওই মহিলা জানতে পারেন, তাঁর গর্ভস্থ ভ্রূণটির জটিলতা রয়েছে। শিশুটি ভূমিষ্ঠ হবে ‘ডাউন সিন্ড্রোম’ নিয়ে। গর্ভধারণের ২৫ সপ্তাহের মাথায় তিনি গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর আইনজীবী কল্লোল বসু ও অপলক বসু জানান, নিয়ম অনুযায়ী ভ্রূণের কোনও জটিলতা থাকলে ২০ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত করিয়ে নেওয়া যায়। সেই সময় পেরিয়ে যাওয়ায় আদালতের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন ওই মহিলা।

এর আগে বিচারপতি চক্রবর্তীর নির্দেশে এসএসকেএম হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ড ওই মহিলার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে রিপোর্ট পেশ করে। সেই রিপোর্টে বোর্ড জানায়, গর্ভপাত করানো উচিত হবে না। গত সপ্তাহে এর আগের শুনানিতে এসএসকেএম হাসপাতালের স্ত্রী ও শিশুরোগ বিভাগের দুই বিভাগীয় প্রধানকে (তাঁরা বোর্ডের সদস্য) এজলাসে ডেকে একান্তে কথা বলেন বিচারপতি। সূত্রের খবর, বিচারপতিকে ওই দুই বিভাগীয় প্রধান জানান, মহিলা ১৪ বছর আগে ‘সিজারিয়ান’ পদ্ধতিতে সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। না হলে এখন ‘সাকশন’ পদ্ধতিতে তাঁর প্রসব করানো যেত। কিন্তু এখন তা সম্ভব নয়। এখন ভ্রূণটির যা বয়স, তাতে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে গর্ভপাত করাতে গেলে শিশুটি জীবিত, অপরিণত অবস্থায় পৃথিবীর আলো দেখবে। তখন তাকে মেরে ফেলার অর্থ, খুন করা।

Advertisement

দুই চিকিৎসক আরও জানান, ভ্রূণটির ক্রোমোজোমে যে জটিলতা আছে, তাতে সে ‘ডাউন সিন্ড্রোম’ নিয়ে জন্মালেও বেঁচে থাকবে। যে সব জটিলতা থাকলে ভ্রূণের গর্ভপাত আইনসম্মত, ‘ডাউন সিন্ড্রোম’ সে তালিকায় পড়ে না। ‘ডাউন সিন্ড্রোম’ থাকা শিশু ভাল পরিচর্যা ও পরিবেশ পেলে সুস্থ জীবন কাটাতে পারে। চিকিৎসকদের কথা শুনে বিচারপতি আইনজীবীদের নির্দেশ দেন, মেডিক্যাল বোর্ডের বক্তব্য অন্তঃসত্ত্বাকে ভাল করে বোঝাতে। এ দিন আইনজীবী কল্লোলবাবু আদালতে জানান, শিশুটিকে যথাযথ পরিচর্যা দেওয়ার আর্থিক সঙ্গতি পরিবারটির নেই। রাজ্যের অতিরিক্ত
অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, মহিলার আরও আগে আদালতে আসা উচিত ছিল। এর আগে হাইকোর্ট যাঁকে গর্ভপাত করানোর অনুমতি দিয়েছিল, সেই মহিলার গর্ভস্থ ভ্রূণটি ছিল মুমূর্ষু। এ ক্ষেত্রে ভ্রূণটি মুমূর্ষু নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন