রেলের মালপত্র বাজেয়াপ্ত করারই নির্দেশ

দিল্লি থেকে গত শনিবার পবন রুইয়াকে যে-সব অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার অন্যতম হল, রেলের দেওয়া কাঁচামালের হিসেব দেয়নি তাঁর সংস্থা জেসপ। আর সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, দমদমের জেসপ কারখানা থেকে রেলের সব মালপত্র বাজেয়াপ্ত করে নিরাপদ জায়গায় রাখতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:২০
Share:

দিল্লি থেকে গত শনিবার পবন রুইয়াকে যে-সব অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার অন্যতম হল, রেলের দেওয়া কাঁচামালের হিসেব দেয়নি তাঁর সংস্থা জেসপ। আর সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, দমদমের জেসপ কারখানা থেকে রেলের সব মালপত্র বাজেয়াপ্ত করে নিরাপদ জায়গায় রাখতে হবে। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী জানিয়ে দেন, শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে সেই কাজ শেষ করে আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে হবে ১৯ তারিখে।

Advertisement

হাইকোর্ট বলেছে, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক, সিআইডি-র অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল কিংবা তাঁর প্রতিনিধি এবং রেলের ডিরেক্টর (স্টোর্স) কিংবা তাঁর প্রতিনিধি জেসপ কারখানা পরিদর্শন করে রেলের মালপত্রের হিসেবনিকেশ করবেন। কী কী মালপত্র কতটা পরিমাণে রয়েছে, তার তালিকা তৈরির পরে সবই বাজেয়াপ্ত করতে হবে। বাজেয়াপ্ত করা মালপত্র রাখতে হবে নিরাপদে।

রেলের মালপত্র ফেরত দিতে চেয়ে জেসপ-কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। আদালতের কাছে তাঁদের আর্জি, মালপত্র ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য রেলকে বারবার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। উপরন্তু কারখানার ফটকে পুলিশ পিকেট থাকায় মালপত্র ফেরতও দেওয়া যাচ্ছে না। এই অবস্থায় আদালত হস্তক্ষেপ করুক এবং মালপত্র যাতে দ্রুত ফেরত নেওয়া হয়, তার নির্দেশ দিক। সোমবার ছিল সেই মামলার শুনানি।

Advertisement

জেসপের আইনজীবী শুদ্ধসত্ত্ব বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, তাঁরা মালপত্র ফেরত দিতে চেয়ে রেল-কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য পুলিশকে একাধিক বার চিঠি দিলেও তার উত্তর মেলেনি। একই সঙ্গে তিনি জানান, জেসপ কারখানায় পুলিশ পিকেট থাকায় তাঁরা সেখানে ঢুকতেই পারছেন না। অথচ অবিলম্বে মালপত্র ফেরত দেওয়া দরকার। কারণ, ডামাডোলের ফাঁকে কারখানার ভিতর থেকে মালপত্র চুরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিছু মালপত্র ইতিমধ্যে হাতিয়েও নিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

রেলের আইনজীবী জ্যোৎস্না রায় জানান, এই ব্যাপারে রেলের যা বলার আছে, সেটা তাঁকে এখনও পর্যন্ত জানানো হয়নি। তার পরেই বিচারপতি নির্দেশ দেন, রেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের বক্তব্য আদালতে জানাতে হবে। আইনজীবী জানান, রেলের বক্তব্য জেনে নিয়ে তিনি তা আদালতে পেশ করবেন। জেসপ ও রেল— দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে এ দিন দমদমে জেসপের কারখানা থেকে রেলের মালপত্র চিহ্নিত ও বাজেয়াপ্ত করার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো নিরাপদে রাখার নির্দেশ দেন বিচারপতি বাগচী।

রেলের অভিযোগ, ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত সাতটি রেক এবং আরও কিছু সরঞ্জাম তৈরির জন্য জেসপকে ৫০ কোটি টাকার বরাত দেওয়া হয়। কাঁচামালও দিয়েছিল রেল। কিন্তু জেসপ চুক্তি অনুযায়ী রেক তৈরি করেনি। কাঁচামালেরও হিসেব দেয়নি। এই অভিযোগ পেয়েই জেসপ-কর্তা পবন রুইয়াকে গত শনিবার দিল্লির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন