Post Poll Violence

West Bengal Post Poll Violence: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার রায় স্থগিত, বুধবারের মধ্যে লিখিত বক্তব্য চাইল হাই কোর্ট

মঙ্গলবার রাজ্যের তরফে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তিনি দাবি করেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট ত্রুটিযুক্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২১ ১৫:২২
Share:

কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।

রাজ্যে ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ মামলার রায়দান স্থগিত রাখল কলকাতা হাই কোর্ট। এই মামলায় শুনানি শেষ হয়েছে মঙ্গলবার। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের যার যা আরও বলার আছে, বুধবারের মধ্যে তা লিখিত আকারে জমা দিতে হবে।

জুলাই হাই কোর্টের নির্দেশে ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ খতিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তা নিয়ে রাজ্যের জবাব চেয়েছিল হাই কোর্ট। কিন্তু রাজ্যের তরফে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের নানা অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এরপর রাজ্যকে এ বিষয়ে অতিরিক্ত হলফনামা জমা দিতে বলে হাই কোর্ট। মঙ্গলবার রাজ্যের হয়ে ভার্চুয়াল শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তিনি দাবি করেন,‘‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট ত্রুটিযুক্ত। কমিটির দু-তিন জন সদস্যের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ রয়েছে। ফলে রিপোর্টটাই ঘিরে সন্দেহ থাকা স্বাভাবিক।’’

Advertisement

সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে বলেছে যে, একজন সদস্য যদি পক্ষপাতদুষ্ট হন, তা হলেও পুরো প্রক্রিয়াটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে।’’ তাঁর দাবি, কমিশনের রিপোর্টে ২৯ এপ্রিল, ২ মে তারিখের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। যা ভোট গণনার আগে ঘটেছিল। অথচ কমিশনের এক্তিয়ার ছিল, কেবলমাত্র ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তদন্তের। তাঁর দাবি, কমিশন জানিয়েছিল, তাদের প্রতিনিধি দল বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছে। কিন্তু কোনও প্রেস নোট প্রকাশ করা হয়নি। এ ছাড়াও সেই নির্দিষ্ট স্থানগুলি বেছে নেওয়ার মানদণ্ড কী, সে প্রশ্নও তোলেন সিঙ্ঘভি।

রাজ্য পুলিশের হয়ে সওয়ালকারী আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় শুনানিতে দাবি করেন, ১৯৭৯টি অভিযোগের মধ্যে ৮৬৪টি অভিযোগের কোনও তারিখ উল্লেখ করা নেই। ৫২টি খুনের অভিযোগ রয়েছে, কিন্তু তার মধ্যে ৮টির কোনও তারিখ উল্লেখ করা নেই। ৭২টি ধর্ষণের ঘটনার মধ্যে ৯টির কোনও তারিখ নেই এবং ৪টি ঘটনা ঘটেছে ২-৫ মের মধ্যে। হিংসার ঘটনার জেরে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ২৬৮টি মামলা করেছে বলে জানান তিনি। সৌমেন্দ্রনাথের এই সওয়ালের সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘প্রথম দিন আপনি বলেছিলেন একটিও ঘটনা ঘটেনি। এখন আপনার অবস্থান বদল হয়েছে।’’

Advertisement

অন্যদিকে শুনানি-পর্বে মামলাকারীদের আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল বলেন, ‘‘একটি স্বাধীন সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল) গঠন করে তদন্ত করা প্রয়োজন।’’ মামলাকারী পক্ষের আর এক আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘হিংসার ঘটনাকে বিতর্কিত বলা যাবে না। যা বিতর্কিত, তা হল কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ। হিংসার ঘটনা ঘটেছে।’’

এ বিষয়ে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর বলেন, ‘‘আদালত যদি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কিছু গুরুতর অপরাধের তদন্ত করতে নির্দেশ দেয় তাহলে আমরা প্রস্তুত আছি। সিবিআই বা এএনআই কে তদন্ত করা যেতে পারে। বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় সে সময় প্রশ্ন তোলেন, ‘‘এখন সমস্ত এফআইআর রাজ্য তদন্তকারী সংস্থার কাছে রয়েছে। এখন তা কি কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে দেওয়ার জন্য উপযুক্ত সময়?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন