Calcutta High Court on Puja Commitee Grant

যে সব পুজো কমিটি খরচের হিসাব দেয়নি, তারা অনুদান পাবে না! জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট, কী বলল রাজ্য?

বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আদালতের আগের নির্দেশ মেনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যে সব পুজো কমিটি খরচের হিসাব দিয়েছে, তারাই অনুদান পাবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৫ ১২:০২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

যে সব দুর্গাপুজো কমিটি খরচের হিসাব দেয়নি, তারা অনুদান পাবে না। স্পষ্ট জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট।

Advertisement

বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আদালতের আগের নির্দেশ মেনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যে সব পুজো কমিটি সার্টিফিকেট দিয়েছে, তারাই অনুদান পাবে। পাশাপাশি, পুজোর ছুটির এক মাসের মধ্যে ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ (খরচের হিসাব) নিয়ে রাজ্যকে রিপোর্ট দিতে হবে।

বুধবার রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানান, অনুদানের ওই অর্থ পুলিশ মারফত পুজো কমিটিগুলির কাছে পৌঁছয়। ৪১,৭৯৯টি ক্লাবের মধ্যে তিনটি ক্লাব খরচের হিসাব দেয়নি। ওই তিনটি ক্লাবই শিলিগুড়ির। জবাবে বিচারপতি পালের মন্তব্য, সংখ্যাটা এত কম যে মাইক্রোস্কোপ লাগবে।

Advertisement

রাজ্যের ওই রিপোর্টের বিরোধিতা করেন মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ওই সার্টিফিকেট জমা দেওয়া হয়নি। কলকাতা পুলিশের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা কোনও তথ্য দেয়নি। এই আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরে ওই তথ্য বলছে রাজ্য। পাল্টা এজির বক্তব্য, ২০২৪ সালে কলকাতার ২,৮৭৬টি ক্লাব সার্টিফিকেট দিয়েছিল। তার পরেই তাদের অনুদান দেওয়া হয়। হাই কোর্ট জানায়, আদালত কোনও সংখ্যার উপর যাচ্ছে না। আদালতের পূর্ব নির্দেশ মেনে বিগত বছরে যে সব কমিটি বা ক্লাব খরচের হিসাব দেয়নি, তারা অনুদান পাবে না। রাজ্যের কি এই বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে? এজি জানান, আদালতের নির্দেশ মেনেই কাজ করা হবে।

অতীতে অনুদানের টাকার খরচের হিসাব না-দিলে কোনও পুজো কমিটিকে এ বার সরকারি অনুদান দেওয়া হবে কি না, গত সোমবারের শুনানিতে সেই প্রশ্ন তুলেছিল হাই কোর্ট। দুর্গাপুজো কমিটিগুলি খরচের হিসাব দিয়েছে কি না, সে বিষয়ে গত সোমবার তথ্য তলব করেছিল আদালত। জানতে চেয়েছিল, কত পুজো কমিটিকে এই অনুদান দেওয়া হয় এবং কতগুলি পুজো কমিটি টাকা খরচের হিসাব দেয়নি। খরচের হিসাব না-দেওয়া কমিটিগুলিকে রাজ্য কেন অনুদান দেওয়া বন্ধ করছে না, সেই প্রশ্নও করেছিল আদালত।

প্রসঙ্গত, দুর্গাপুজো কমিটিকে অনুদান দেওয়া নিয়ে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। সরকারি অর্থের অপব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন মামলাকারী। তাঁর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং শামিম আহমেদের সওয়াল, উপযুক্ত জায়গায় খরচ না করে জনগণের টাকা পুজো কমিটিগুলিকে বিলিয়ে দিচ্ছে সরকার। যদিও রাজ্যের বক্তব্য ছিল, ওই টাকা জনগণের স্বার্থেই ব্যবহার করার জন্য দেওয়া হচ্ছে। তাদের যুক্তি, ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পুলিশ ওই টাকা খরচ করছে। এ ছাড়া কোভিড পরিস্থিতিতে বেশ কিছু বিধিনিষেধের জন্য খরচ করা হয়েছিল।

সেই সময় হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, সরকারি অনুদানের টাকা কোথায় খরচ হচ্ছে, তা নিয়ে হিসাব দিতে হবে পুজো কমিটিগুলিকে। মামলাকারীর আইনজীবীর অভিযোগ, অনেক পুজো কমিটি সেই হিসাব জমা দেয়নি। তার পরেই এ বিষয়ে রাজ্যের বক্তব্য জানতে চায় হাই কোর্ট। বুধবার আদালতে সেই তথ্য দিল রাজ্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement