—ফাইল চিত্র।
বিচারপতির নির্দেশ সত্ত্বেও স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর কোনও প্রতিনিধি বা আইনজীবী শুক্রবার আদালতে হাজির হননি। তাই এসএসসি-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার ‘রুল’ বা বিধি প্রয়োগ করল কলকাতা হাইকোর্ট। এসএসসি-র চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে ওই রুল প্রয়োগ করে শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দিয়েছেন, ২৮ জানুয়ারি ওই দু’জনকে তাঁর আদালতে হাজির হতে হবে। হাজিরা দিয়ে জানাতে হবে, কেন তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা গ্রাহ্য হবে না।
মেধা-তালিকা প্রকাশ না-করেই নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সেলিং হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে মণিকা রায়-সহ উত্তর দিনাজপুরের দু’জন প্রার্থী গত বছর হাইকোর্টে মামলা করেন। তাঁদের আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী এ দিন জানান, মামলার আবেদনে বলা হয়, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এসএসসি। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, লিখিত পরীক্ষার পরে ইন্টারভিউয়ে ডাক পাওয়া প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। তার পরে ইন্টারভিউ ও লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ঘোষিত হবে মেধা-তালিকা। চূড়ান্ত কাউন্সেলিংয়ের তালিকা প্রকাশ করা হবে একেবারে শেষে। বিজ্ঞপ্তিতে পর্যাক্রমিক পদ্ধতি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও এসএসসি-কর্তৃপক্ষ নিজেদের সেই ঘোষণাকে মান্যতা দিচ্ছেন না।
ওই মামলার শুনানি হয় গত ১৮ সেপ্টেম্বর। আইনজীবী আশিসবাবু আদালতে অভিযোগ করেন, মেধা-তালিকা প্রকাশ না-করেই এসএসসি ৬ সেপ্টেম্বর কাউন্সেলিং শুরু করে দিয়েছে। সরকারি কৌঁসুলি অবশ্য আদালতে জানান, এসএসসি-কর্তৃপক্ষ নিয়ম মেনেই কাউন্সেলিং করছেন। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি মান্থা ওই দিন এসএসসি-কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, মেধা-তালিকা তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে।
তা সত্ত্বেও ওই তালিকা প্রকাশ করা হয়নি বলে অভিযোগ। সেই জন্য গত বছরেই আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন আবেদনকারী প্রার্থীরা। বিচারপতি মান্থা গত ২০ ডিসেম্বর আদালত অবমাননার মামলার শুনানির সময় আশিসবাবুকে নির্দেশ দেন, এসএসসি-কর্তৃপক্ষের কাছে মামলার নোটিস পাঠানো হোক। তিনি একই সঙ্গে এসএসসি-কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন, ১৮ জানুয়ারি তাঁর আদালতে হাজির হতে হবে।
আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও এ দিন এসএসসি-র পক্ষে কোনও আইনজীবী বা কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিনিধি আদালতে হাজির হননি। তা দেখে আদালত অবমাননার রুল প্রয়োগের নির্দেশ দেন বিচারপতি মান্থা।