যক্ষ্মার মতো উপসর্গ, আদতে নয়। তবু চিকিৎসা শুরু। নিম্নবিত্ত পরিবারের এক রোগী কোনও নামী হাসপাতালে এসেছেন। কারণ, সরকারি ডটস চিকিৎসা-কেন্দ্রের কার্যকারিতার উপর তাঁর আস্থা নেই। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, পোলিও, এইচআইভি নিয়ে যতটা প্রচার, যক্ষ্মা নিয়ে প্রচার এখনও কম। অনেক চিকিৎসক এখনও যক্ষ্মা রোগীর নাম সরকারি ভাবে নথিভুক্ত করাচ্ছেন না।
যক্ষ্মা সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান, যক্ষ্মা চিহ্নিতকরণ ও চিকিৎসা প্রক্রিয়ার এমন বহু ফাঁকের কথা শনিবার উঠে এল এক আলোচনায়। উদ্যোক্তা, কলকাতা পুরসভা ও যক্ষ্মা মোকাবিলা কর্মসূচিতে তাদের সহযোগী ‘টিউবারকিউলোসিস হেলথ অ্যাকশন লার্নিং ইনিসিয়েটিভ’ (থালি)। চলতি বছরের কেন্দ্রীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে এক বছরে ৮৯,৬৫৬ যক্ষ্মার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। বোঝা যাচ্ছিল এর একটা বড় অংশই কলকাতার। কিন্তু সকলকে চিহ্নিত করে চিকিৎসার আওতায় আনা যাচ্ছে না। পুরসভার চিকিৎসক সন্দীপ রায় যেমন জানালেন, পুরসভার হাতে এখন ৩৮টি সিভি-ন্যাক মেশিন আছে। তাতে খুব দ্রুত, নির্ভুল ও নিখরচায় যক্ষ্মা নির্ণয় করা যায়। কিন্তু অনেক চিকিৎসকই পুর-ক্লিনিকে এই টেস্টের জন্য রোগীদের পাঠাচ্ছেন না।
ফুসফুস বিশেষজ্ঞ সুস্মিতা রায়চৌধুরীর মতে, অনেকে নতুন রোগীর নাম সরকারি ভাবে নথিভুক্ত করেন না। যক্ষ্মা মোকাবিলায় বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে এগিয়ে আসতে বলেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের উপদেষ্টা তপন মুখোপাধ্যায়। চিকিৎসক কুণাল সরকারের মতে, একটি ব্লকবাস্টার ফিল্মে যা আয় হয় বা বুলেট ট্রেন চালুতে যা ব্যয় হয়, সেই অর্থ যক্ষ্মা মোকাবিলায় খরচ করলে যক্ষ্মামুক্ত দেশ গড়ে উঠত।