তলে তলে প্রতিটি পাই-পয়সার হিসেব রেখে গিয়েছেন তিনি।
যখনই কোনও প্রভাবশালী টাকা নিয়েছেন, তিনি তা সবিস্তার লিখে রেখে গিয়েছেন। এ বার রোজ ভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডুর সেই খেরোর খাতা খুলে বসছে সিবিআই।
সিবিআইয়ের দাবি এই ‘সিক্রেট ফান্ড’ বা গুপ্ত তহবিলের হিসেব খাতায় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস পাল ছাড়াও শাসক দলের বেশ কয়েক জন নেতা-মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়কের নাম রয়েছে। তৃণমূলের দুই সাংসদ তাপস-সুদীপকে ইতিমধ্যেই জেলে পুরেছে সিবিআই। এ বার তারা হাত বাড়াতে চাইছে গোপন তহবিলের লেনদেনে নাম থাকা অন্য প্রভাবশালীদের দিকে।
সিবিআইয়ের এক তদন্তকারীর কথায়— গৌতম এর আগে এই তহবিল নিয়ে কিছু খোলসা করেননি। মাস পাঁচেক আগে সুদীপের বিষয়ে তদন্তের সময়ে রোজ ভ্যালির এক হিসেবরক্ষক ওই তহবিলের হদিস দিয়েছেন সিবিআইকে।
আরও পড়ুন:প্রভাবশালী তকমাতেই বিদ্ধ সুদীপ
সম্প্রতি সুদীপ ও তাপসের নামে যে চার্জশিট সিবিআই দিয়েছে, সেখানে ওই দু’জনকেই গোপন তহবিল থেকে টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছে সিবিআই। চার্জশিটে বলা হয়েছে— ২০১১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সুদীপকে রোজ ভ্যালি থেকে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল ওই তহবিল থেকেই। পরের বছর ১৮ নভেম্বর ওই তহবিল থেকেই তাপস পালকে ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়।
সিবিআই ওই চার্জশিটে আদালতকে জানিয়েছে, নিজের এক বিশ্বাসভাজন হিসাবরক্ষককে দিয়ে ওই তহবিলের হিসেব রাখতেন গৌতম। যখন যাঁকে হিসেব বহির্ভূত টাকা দেওয়া হয়েছে, দিন ক্ষণ লিখে সেই ব্যক্তির নাম ও টাকার অঙ্ক লিখে রাখা হয়েছে। সিবিআইয়ের দাবি, এই গোপন তহবিল লেনদেনও হতো কৌশলে। রোজ ভ্যালি থেকে টাকা ট্রান্সফার হতো এক দালালের অ্যাকাউন্টে। বলা হতো, তার মাধ্যমে এই টাকা লগ্নি করা হচ্ছে। প্রভাবশালীদের টাকা দেওয়ার সময়ে ওই দালালের কাছ থেকেই নগদ টাকা নিয়ে আসা হতো।
সিবিআই মনে করছে, এখন ওই গোপন তহবিল নিয়ে ফের গৌতমকে জেরা করা হলে আরও কিছু নতুন নাম উঠে আসবে। গৌতমকে ফের জেরার জন্য আদালতের অনুমতি মিলেছে। সিবিআই চাইছে খুব তাড়াতাড়ি গৌতমকে কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে গিয়ে জেরা করতে।