নন্দীগ্রামের মামলা উঠল আদালতে। কিন্তু সিবিআই যে-চার পুলিশ অফিসারের নামে চার্জশিট দিয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চালানোর অনুমতি দেয়নি রাজ্য সরকার। তাই বৃহস্পতিবারেও সেই মামলার শুনানি হল না।
আদালত সূত্রের খবর, এ দিন বিচার ভবনে নন্দীগ্রামের ওই মামলার শুনানি ছিল। বিচারক সিবিআইয়ের কৌঁসুলির কাছে জানতে চান, যে-সব পুলিশ অফিসারের নাম চার্জশিটে আছে, রাজ্য সরকার কি তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চালানোর অনুমতি দিয়েছে? আদালতকে জানানো হয়, বারবার চেয়েও সেই অনুমতি আজও পাওয়া যায়নি। অগত্যা এ দিনও তার শুনানি হল না। অভিযুক্ত ওই চার জন অফিসার হলেন সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাশিস বড়াল, শেখর রায় এবং অমিত হাটি। চার জনেই এখনও চাকরিতে রয়েছেন। দুই সিনিয়রের মধ্যে সত্যজিৎবাবু এখন মালদহ রেঞ্জের ডিআইজি এবং দেবাশিসবাবু কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার। শেখরবাবু বিধাননগর পূর্ব থানায়, অমিতবাবু বাঁকুড়ায় আছেন।
নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ, তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, ‘‘ওই চার জনই দোষী। কেন রাজ্য সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চালানোর অনুমতি দিচ্ছে না, তা রাজ্য সরকারই ভাল বলতে পারবে। আমি তো আর সরকারের মুখপাত্র নই!’’ নন্দীগ্রামের বিধায়ক ফিরোজা বিবির সঙ্গে সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলনে কে কোথায় ছিল, সেটা কি আমি মনে করে রেখেছি? কে দোষী আর কে নির্দোষ, তা বলতে পারব না।’’ বিষয়টি বিচারাধীন বলে তিনি আর কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
তবে শুভেন্দুবাবুর অভিযোগ, সিবিআইয়ের পেশ করা চার্জশিট অসম্পূর্ণ। তিনি জানান, ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ, গুলিচালনার দিন অভিযুক্ত ওই চার অফিসার ছিলেন নন্দীগ্রামের গোকুলনগর অধিকারী পাড়ায়। সে-দিন সেখানে মারা যান তিন জন। শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘সে-দিন ভাঙাবেড়ায় গুলি চলায় ১১ জনের মৃত্যু হয়। ভাঙাবেড়ায় গুলি চালানোর পিছনে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের নামই তো সিবিআইয়ের চার্জশিটে নেই! এ তো পত্ক্ষপাতদুষ্ট চার্জশিট।’’ সাংসদের অভিযোগ মূলত দুই সিনিয়র আইপিএস অফিসার অরুণ গুপ্ত, রমেশবাবুর বিরুদ্ধে। তাঁরা ঘটনার দিন ভাঙাবেড়ায় ছিলেন। এ ছাড়াও তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলের নাম চার্জশিটে থাকা উচিত ছিল বলে এ দিন মন্তব্য করেন শুভেন্দুবাবু।