সারদার তথ্য-তালাশে আবার সেই থানায় হাজির সিবিআই

বৃহস্পতিবারের পরে শুক্রবার। সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে সিবিআই অফিসারেরা পরপর দু’দিন তথ্য-তালাশ চালালেন সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায়। সিবিআই সূত্রের খবর, সারদা থেকে নানা সময়ে বিভিন্ন লোককে টাকা দেওয়ার যে-তালিকা এবং সংশ্লিষ্ট নথি পুলিশের কাছে রয়েছে, এ দিন মূলত সেগুলোই খতিয়ে দেখা হয়েছে। বহু প্রভাবশালী ব্যক্তিও সারদার টাকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তবে তাঁদের নাম ওই তালিকায় নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৪৭
Share:

বৃহস্পতিবারের পরে শুক্রবার। সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে সিবিআই অফিসারেরা পরপর দু’দিন তথ্য-তালাশ চালালেন সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায়। সিবিআই সূত্রের খবর, সারদা থেকে নানা সময়ে বিভিন্ন লোককে টাকা দেওয়ার যে-তালিকা এবং সংশ্লিষ্ট নথি পুলিশের কাছে রয়েছে, এ দিন মূলত সেগুলোই খতিয়ে দেখা হয়েছে। বহু প্রভাবশালী ব্যক্তিও সারদার টাকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তবে তাঁদের নাম ওই তালিকায় নেই।

Advertisement

সারদার তছরুপ নিয়ে রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) বা বিশেষ তদন্তকারী দল তদন্ত শুরু করার পরে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানাতেই যাবতীয় নথি রাখা হয়েছিল। ওখানকার অফিসারেরাই তদন্তের কাজ চালিয়েছেন। বস্তুত সিটের তদন্ত পরিচালিত হচ্ছিল ওই থানা থেকেই। তাই পরপর দু’দিন ওই থানায় গিয়ে পুলিশের বাজেয়াপ্ত করা নথি খতিয়ে দেখেন সিবিআই অফিসারেরা। বৃহস্পতিবার থানায় প্রথম হাজির হওয়ার পরে ঠিক ছিল, কয়েক দিন পরে সিবিআই আবার সেখানে যেতে পারে। কিন্তু ঠিক পরের দিনই তাদের ফের থানায় হাজির হওয়াটা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্ত চলাকালীন পুলিশের তরফে সারদার কর্মী, আমানতকারী এবং অন্যান্য সাক্ষীর যে-সব বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছিল, সেগুলোও এ দিন খতিয়ে দেখা হয় বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। সিবিআইয়ের লোকজন কথা বলেছেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের সঙ্গেও। থানায় সারদা মামলার যে-সব নথি আছে, তার সঙ্গে নিজেদের সংগৃহীত তথ্য মিলিয়ে দেখছে সিবিআই।

সারদা-নথি হস্তান্তর নিয়ে রাজ্য পুলিশ এবং সিবিআইয়ের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ এবং চাপান-উতোর চলছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্তে নামার পরে সিবিআই বারবার অভিযোগ করেছে, রাজ্য পুলিশ ওই বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থার কাগজপত্র তাদের দিচ্ছে না। আর পুলিশের একাংশের বক্তব্য, সারদা-সম্পত্তির অধিকাংশ নথি তাদের কাছে আছে। ওই সম্পত্তির মূল্য কমপক্ষে ৭০০ কোটি টাকা। কিন্তু সিবিআই সেই সম্পত্তি সংক্রান্ত নথি নিয়ে যাচ্ছে না। এই অবস্থায় সিবিআই অফিসারেরা বৃহস্পতিবারেই প্রথম ওই থানায় গিয়ে নথিপত্র দেখেন। নথি যাচাইয়ের কাজ চলে শুক্রবারেও।

Advertisement

সিবিআই সল্টলেকের যে-বাড়িতে বসে সারদা-তদন্ত চালাচ্ছে, সেই একই বাড়িতে তদন্তের কাজ করছে অন্য কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সারদার যে-কর্মী ওই লগ্নি সংস্থার জমিজমা এবং অন্যান্য সম্পত্তির হিসেব রাখতেন, সেই অশোক বিশ্বাসকে ডেকে দু’দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছেন ইডি অফিসারেরা। তদন্ত সংস্থা সূত্রের খবর, কোথায় কোথায় সারদার জমি রয়েছে এবং কোথায় তাদের ঠিক কতটা অন্যান্য সম্পত্তি আছে, তার সবিস্তার তথ্য রয়েছে অশোকবাবুর কাছে। এর আগেও অশোকবাবু বেশ কয়েক বার সল্টলেকের ইডি অফিসে গিয়ে এই ব্যাপারে বয়ান দিয়েছেন।

এ দিনই ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায় দলবল নিয়ে সল্টলেকে ইডি-র দফতরে যান। তাঁর দাবি, সেই দলে সারদার বেশ কিছু আমানতকারীও ছিলেন। যাঁরা সারদায় টাকা রেখে আর ফেরত পাননি। সারদার সম্পত্তি বিক্রি করে যাতে এই সব আমানতকারীর টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা হয়, এ দিন ইডি অফিসে গিয়ে লিখিত ভাবে সেই আবেদনই জানিয়েছেন তিনি। ডায়মন্ড হারবার রোডে একটি ঠিকানায় সারদা গোষ্ঠীর বহু সংস্থাকে বিধি ভেঙে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে বলে এর আগে পুরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন ওই কাউন্সিলর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন