তিন দিনের সিবিআই হেফাজত, অনেকের নাম বলছেন তাপস পাল

দীর্ঘ অভিনয় জীবন যে তাঁর, বিলক্ষণ জানেন সিবিআই অফিসারেরা। দেড় দিন ধরে তাঁকে জেরার সময়ে তাই তাঁর বেশির ভাগ অভিব্যক্তি দেখে ভ্রু কুঁচকে যাচ্ছে সিবিআই অফিসারদের। কখনও মুচকি হাসি, কখনও অবাক হওয়া, কখনও চোখে মুখে কষ্টের ছবি, কখনও বা ভাবলেশহীন অভিব্যক্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:১৩
Share:

দীর্ঘ অভিনয় জীবন যে তাঁর, বিলক্ষণ জানেন সিবিআই অফিসারেরা। দেড় দিন ধরে তাঁকে জেরার সময়ে তাই তাঁর বেশির ভাগ অভিব্যক্তি দেখে ভ্রু কুঁচকে যাচ্ছে সিবিআই অফিসারদের। কখনও মুচকি হাসি, কখনও অবাক হওয়া, কখনও চোখে মুখে কষ্টের ছবি, কখনও বা ভাবলেশহীন অভিব্যক্তি। শনিবার ভুবনেশ্বর আদালতে দাঁড়িয়ে বেশ কয়েক বার চোখ মুছতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে।

Advertisement

তবে শনিবার সারা দিনের জেরা পর্বে এক বারই তাপস পালকে সত্যিকারের বিপন্ন দেখিয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, তাপসের সামনেই এক বার নন্দিনীর কাছে তার অ্যাকাউন্টে থাকা টাকার কথা জানতে চাওয়া হয়। অভিযোগ, নন্দিনী সরাসরি জানিয়ে দেন ওই টাকা তাঁর নয়, তাপসেরই। সিবিআই অফিসারেরা জানিয়েছেন, নন্দিনীর মুখে ওই কথা শুনে চমকে ওঠেন তাপস। কিছু ক্ষণ এমন ভাবে তাকিয়ে থাকেন, যেন বলতে চান— ‘‘ব্রুটাস, তুমিও!’’ তবে মুখে কিছু বলেননি তাপস।

তবে নাছোড় সিবিআই অফিসারদের ক্রমাগত জেরায় সাংসদ-অভিনেতা বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। এমনকী বেশ কিছু প্রভাবশালীর নামও করেছেন, যাঁরা রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর ঘনিষ্ঠ এবং তাঁদের জেরা করলে নতুন তথ্য মিলবে। কারণ তাঁরা রোজ ভ্যালির কাছ থেকে নিয়মিত আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন।

Advertisement

শুক্রবার কলকাতায় গ্রেফতারের পর রাতের বিমানেই সাংসদ-অভিনেতা তাপস পালকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত দুটো নাগাদ ভুবনেশ্বরের নয়াপল্লিতে সিবিআইয়ের ৮ নম্বর ইউনিট অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। তাপসের স্ত্রী নন্দিনীও ওই উড়ানে তাঁর সঙ্গে যান। শনিবার বেলা দেড়টা নাগাদ তাপসকে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে নিয়ে যান তদন্তকারীরা। তখনও পাশে ছিলেন নন্দিনী। পাঁচ দিনের জন্য তাপসকে নিজেদের হেফাজতে চেয়েছিল সিবিআই। তিন দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক প্রশান্ত মিশ্র।

ভুবনেশ্বর থেকে সিবিআইয়ের আইনজীবী কালীচরণ মিশ্র এ দিন বলেন, ‘‘সাংসদ নিজের ক্ষমতাবলে রোজ ভ্যালি-কে আর্থিক তছরুপে সাহায্য করেছেন এবং ষড়যন্ত্রে সামিল হয়েছেন বলে গোয়েন্দাদের হাতে একাধিক তথ্য প্রমাণ রয়েছে।’’ তিনি কিছু বলতে চান কি না, এ দিন বিচারক তাপসের কাছে জানতে চান। তিনি হাতজোড় করে বলেন, ‘‘হুজুর, আমি নির্দোষ।’’

আদালতে তাপসের আইনজীবী সুচিত মহান্তি জানান, সাংসদ তদন্তে সাহায্য করছেন। এর পরেও করবেন। তাই, তাঁকে হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করার প্রয়োজন নেই। তিনি অসুস্থও। বিচারক বলেন, জেরার সময়ে তাঁর স্ত্রী নন্দিনী দূর থেকে তাপসের স্বাস্থ্যের ওপর নজর রাখতে পারবেন। তবে তিনি যাতে কোনও কথা শুনতে না-পারেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন