Binay Mishra

হানা বিনয় ‘ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ীর বাড়িতে

সিবিআই জানিয়েছে, কয়লা পাচারের টাকা কী ভাবে বিদেশে গিয়েছে, তার খোঁজ চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:৪৪
Share:

ফাইল চিত্র।

কয়লা পাচার কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা এবং যুব তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্রের ‘ঘনিষ্ঠ’ এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি চালাল সিবিআই। শুক্রবার সকালে বাঁশদ্রোণী এলাকায় ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি ও অফিস থেকে নথি ও কম্পিউটার-ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রের খবর। তবে ওই ব্যবসায়ীর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। ওই ব্যবসায়ীর পরিজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। শুধু বাঁশদ্রোণী নয়, কলকাতা, হাওড়া-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকাতেই এ দিন তল্লাশি হয়।

Advertisement

সিবিআই জানিয়েছে, কয়লা পাচারের টাকা কী ভাবে বিদেশে গিয়েছে, তার খোঁজ চলছে। লালা ঘনিষ্ঠ হিসাব-রক্ষক ও ব্যবসায়ীদের নামের তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর, সম্প্রতি সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলা ও শ্যালিকা মেনকা গম্ভীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কয়লা পাচারের লভ্যাংশের মোটা অংশ ওই দু’জনের বিদেশের ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে।

সিবিআইয়ের তদন্তকারী দাবি, বাঁশদ্রোণীর ওই ব্যবসায়ী মারফত কয়লা পাচারের লভ্যাংশের কালো টাকা বিদেশে পাচার করা হতো। তা ছাড়াও প্রভাবশালীদের কালো টাকা সাদা করতে ওই ব্যবসায়ী সাহায্য করতেন। অভিযোগ, বিভিন্ন ব্যবসায় সেই কালো টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। শুধু লালা নন, ওই ব্যবসায়ী কয়লা পাচারের অন্যতম অভিযুক্ত শাসক দলের পলাতক নেতা বিনয় মিশ্রেরও ঘনিষ্ঠ বলে সিবিআইয়ের দাবি। কয়লা পাচারের লভ্যাংশের টাকা ওই ব্যবসায়ী মারফত প্রভাবশালীদের কাছে পৌঁছান হত বলে দাবি করছেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারীদের অনুমান, কোন কোন প্রভাবশালীর টাকা কোথায় বিনিয়োগ করা হয়েছে তা ওই ব্যবসায়ীর কাছে খোঁজ রয়েছে।

Advertisement

এক সিবিআই কর্তার কথায়, ‘‘বিনয় মিশ্র মারফত প্রভাবশালীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কয়লা পাচারের কয়েকশো কোটি টাকা জমা হয়েছে। বিনয়ের সঙ্গে প্রভাবশালীদের আর্থিক লেনদেনের নানা তথ্য আমরা পেয়েছি। গত বুধবার আসানসোল কোর্টে বিনয় মিশ্রের নাম উল্লেখ করে যে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে, সেখানে এই লেনদেনের কথা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।’’

সিবিআই জানিয়েছে, বিনয় বর্তমানে পলাতক। তাঁর সঙ্গে যে সব প্রভাবশালীদের যোগাযোগের তথ্য হাতে এসেছে, এখন তালিকা ধরে ধরে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়েছে। ওই সব প্রভাবশালীরা এখনও পর্যন্ত পলাতক নন। তাঁদের নোটিস করে ডেকে পাঠানো হচ্ছে। সাড়া না দিলে বাড়ি ও অফিসে হানা দেওয়া হচ্ছে। ‘‘তদন্তে ওই সব প্রভাবশালী অসহযোগিতা করলে প্রয়োজনে আদালতের কাছে কড়া আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আবেদন করা হবে’’, বলেন সিবিআই কর্তা।

তদন্তকারীদের দাবি, কয়লা পাচারের লভ্যাংশের একাংশ রাজ্য পুলিশের কিছু কর্তার কাছেও পৌঁছেছিল। ওই কর্তাদের কালো টাকাও বাঁশদ্রোণীর ওই ব্যবসায়ী মারফত বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করে সাদা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সিবিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন