সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা পঙ্কজ শ্রীবাস্তব।—ফাইল চিত্র।
ছুটির বিকেল-সন্ধ্যায় সিবিআই-পুলিশ ধুন্ধুমার কাণ্ডের পরে রবিবারেই নিজাম প্যালেস ও সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের দফতরে নিরাপত্তার দায়িত্ব হাতে তুলে নেয় আধা-সামরিক বাহিনী। তার মধ্যেই সোমবার কলকাতায় সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা পঙ্কজ শ্রীবাস্তবের দফতরে গিয়ে একটি মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন বলে নোটিস ধরিয়ে দিলেন কলকাতা পুলিশের দুই অফিসার।
পঙ্কজকে গ্রেফতার করতেই কলকাতা পুলিশ নিজাম প্যালেসে হানা দেয় বলে রবিবার রাতে খবর রটে গিয়েছিল। পরে নিজাম প্যালেস ও সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের দফতরে আধাসেনা মোতায়েন করা হয়। কলকাতার এই দু’টি জায়গাতেই ওই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার দফতর রয়েছে।
‘‘কলকাতা পুলিশের নোটিস পেয়েছি। কিন্তু কী বিষয়ে সেটি পাঠানো হয়েছে, তা জানা নেই,’’ এ দিন বিকেলে দিল্লি উড়ে যাওয়ার আগে বলেন পঙ্কজ। লালবাজার সূত্রের খবর, বৈভব খাটোর নামে উত্তরপাড়ার এক বাসিন্দা আদালতের মাধ্যমে ভবানীপুর থানায় অভিযোগ আনেন, সিবিআইয়ের এক অফিসার তাঁকে নিজাম প্যালেসে জোর করে আটকে রেখেছিলেন। তিনি হাওড়ার জঙ্গলপুরের একটি কারখানার শ্রমিক। তাঁর অভিযোগ, কারখানার মালিক সিবিআইয়ের হাত থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরে তাঁকে এবং এক সঙ্গীকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যান ওই সিবিআই অফিসার। ওই দু’জনকে প্রায় ১২ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। প্রায় ছ’মাস আগেকার সেই ঘটনায় দিন দশেক আগে আসা অভিযোগের সূত্র ধরেই এ দিন দুপুরে ভবানীপুর থানার দুই অফিসার সোজা নিজাম প্যালেসের চোদ্দো তলায় সিবিআইয়ের দফতরে পৌঁছে যান। দফতরের পাহারায় ছিল সিআরপি।
আরও পড়ুন: মমতাকে রাস্তার লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনা খুব বড় ভুল হল না তো? চিন্তায় বিজেপি
নিজাম প্যালেসের মতোই সিআরপি সোমবার সারা দিন সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের দফতরের চৌহদ্দিতে পাহারায় ছিল। দু’টি জায়গাতেই চৌহদ্দির বাইরে গাড়ি নিয়ে স্থানীয় পুলিশকে নজরদারি চালাতে দেখা গিয়েছে। মেদিনীপুর থেকে রবিবার রাতেই সিআরপি-র একটি দল এবং সোমবার সকালে আরও একটি দল সিজিও কমপ্লেক্সে এসে নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়।
নিজাম প্যালেসের যে-ভবনে সিবিআইয়ের দফতর রয়েছে, পরিচয়পত্র দেখে সন্তুষ্ট হলে
তবেই এ দিন সেখানে ঢোকার অনুমতি মিলেছে। দুই জায়গায় মহিলা জওয়ানদেরও মোতায়েন
করা হয়েছিল। বেলা সওয়া ১১টা নাগাদ নিজাম প্যালেসে নিজের অফিসে ঢোকেন সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা পঙ্কজ। অফিসের ভিতরে ঢোকার আগে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, পুরো তদন্তের রিপোর্ট তৈরি করে পাঠানো হবে দিল্লিতে। তার পরেই বেলা দেড়টা নাগাদ সেখানে পৌঁছন ভবানীপুর থানার দুই অফিসার।
পুলিশি সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের কমিশনার রাজীব কুমারও এ দিন বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন লালবাজারে নিজের দফতরে। সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ৯টা নাগাদ সোজা ধর্নামঞ্চে যান তিনি। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ লালবাজারে নিজের দফতরে ঢোকেন। দুপুরের পরে তিনি আবার যান ধর্নামঞ্চে। সেই ধর্নামঞ্চেই রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের পদক প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজীব।