নাগেশ্বরের বন্ধুর বাড়ি, সংস্থায় পুলিশি তল্লাশি

আর্থিক লেনদেন নিয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার কলকাতা পুলিশ একটি নন-ব্যাঙ্কিং আর্থিক সংস্থার ক্লাইভ রো-র অফিস এবং সল্টলেকের একটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩৭
Share:

তল্লাশি। নিজস্ব চিত্র

আর্থিক লেনদেন নিয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার কলকাতা পুলিশ একটি নন-ব্যাঙ্কিং আর্থিক সংস্থার ক্লাইভ রো-র অফিস এবং সল্টলেকের একটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে। ওই অফিস এবং বাড়ির মালিকের সঙ্গে সিবিআই-কর্তা নাগেশ্বর রাওয়ের স্ত্রীর যোগাযোগ এবং আর্থিক লেনদেন রয়েছে বলে পুলিশি সূত্রের খবর।

Advertisement

রাতে কলকাতা পুলিশ জানায়, অ্যাঞ্জেলা মার্কেন্টাইল প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থায় এ দিন তল্লাশি চালানো হয়। সংস্থার মালিক প্রবীণ আগরওয়াল আইন অনুযায়ী তাঁর কোম্পানি নথিভুক্ত করেননি।

এতেও পুলিশ-সিবিআই দ্বৈরথের ছায়া দেখছে রাজনৈতিক মহল। আজ, শনিবার সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে শিলংয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই। এ দিন রাজীব এবং কলকাতা পুলিশের আরও কয়েক জন কর্তা শিলং গিয়েছেন। গত রবিবার, নাগেশ্বর সিবিআইয়ের অন্তর্বর্তী প্রধান পদে থাকার সময়েই কলকাতায় রাজীবের সরকারি বাসভবনে হানা দিতে গিয়েছিল সিবিআই। তাতে বাধা দেয় কলকাতা পুলিশ। যা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চরমে পৌঁছেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: বই ফেলে দেয় বাবা, পড়তে চেয়ে বাড়ি ছাড়ল কিশোরী

এই পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন বিকেল থেকে ওই দু’জায়গায় পুলিশের তল্লাশি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। অনেকের প্রশ্ন, সিবিআই-কে পাল্টা চাপে রাখতেই কি এই কৌশল নিয়েছে লালবাজার? উত্তর মেলেনি। কলকাতা পুলিশের একটি অংশ অবশ্য দাবি করেছে, ওই সংস্থার বিরুদ্ধে বেআইনি অর্থনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে বৌবাজার থানায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই কোম্পানি এবং তার সংযুক্ত কোম্পানিতে হানা দিয়েছেন গোয়েন্দারা।

আরও পড়ুন: আজ ‘ঠান্ডা’ শিলংয়ে প্রশ্ন রাজীবকে​

এ দিন দুপুরে দু’টি গাড়িতে চেপে এক মহিলা-সহ কলকাতা পুলিশের আট জনের একটি দল সল্টলেকের সিএ-৩৯ ঠিকানার বাড়িতে পৌঁছয়। রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালায় দলটি। সেই সময় বাড়ির ভিতরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ভিতরে কী হচ্ছে, সেই ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে চাননি। পুলিশ ওই বাড়ি থেকে কম্পিউটার হার্ড ডিস্ক-সহ বহু নথি বাজেয়াপ্ত করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে। দু’টি ব্যাগ নিয়ে পুলিশের দলটি বেরিয়ে যায়। একই ভাবে হেয়ার স্ট্রিট থানা এলাকার ৫ ক্লাইভ রো-র চারতলায় একটি অফিসে হানা দেন কলকাতা পুলিশের অফিসারেরা।

পুলিশি সূত্রের দাবি, ওই সংস্থায় আগেও তল্লাশি হয়েছে। নাগেশ্বর সংক্রান্ত বিতর্ক শুরু হয় তখনই। আর্থিক তছরুপে অভিযুক্ত সংস্থার সঙ্গে সিবিআই-কর্তার পরিবারের আর্থিক লেনদেন থাকবে কেন, উঠছে সেই প্রশ্নও। পুলিশি সূত্রের দাবি, ২০১১ ও ২০১২ সালে নাগেশ্বের স্ত্রীর সঙ্গে ওই সংস্থার আর্থিক লেনদেন হয়েছিল। নাগেশ্বরের মেয়ে ওই সংস্থায় চাকরি করতেন। আগের তল্লাশিতেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া গিয়েছিল বলে জানায় পুলিশ।

অক্টোবরে নাগেশ্বর সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছিলেন, ওই সংস্থার মালিক তাঁর পারিবারিক বন্ধু। একটি যৌথ সম্পত্তি কেনার জন্য তাঁর স্ত্রী ওই সংস্থা থেকে ঋণ নেন এবং পরে অন্য একটি সম্পত্তি বিক্রি করে তা শোধ করে দেন। ঋণের অঙ্ক কেটে নিয়ে সম্পত্তি বিক্রির বাকি টাকা ওই সংস্থা ফেরত দিয়েছিল। তাঁর সম্পত্তি সংক্রান্ত সব তথ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আছে বলেও জানান নাগেশ্বর।

কলকাতায় নন-ব্যাঙ্কিং সংস্থার অফিস এবং সল্টলেকের বাড়িতে এ দিনের পুলিশি অভিযান সম্পর্কে নাগেশ্বর সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেছেন, ‘‘যা কিছু হচ্ছে, তার সবই প্রোপাগান্ডা, অপপ্রচার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন