এসএসকেএমের সুপারের ঘর থেকে বেরোচ্ছেন লকেট। ছবি: সুমন বল্লভ।
কুকুরের ডায়ালিসিসের তোড়জোড়ের ঘটনা নিয়ে তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন এসএসকেএম হাসপাতালের সুপার মানস সরকার। আর সেখানকার অধিকর্ত্রী মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার হাল্কা হেসে মন্তব্য করেছেন, তিনি মাত্রই কয়েক দিন হল কাজে যোগ দিয়েছেন। ওই বিষয়ে খোঁজখবর করা তাঁর অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই।
যে-কুকুর কাণ্ড নিয়ে রাজ্য জুড়ে তোলপাড় চলছে, সেই ব্যাপারে খোদ এসএসকেএম-কর্তৃপক্ষের এমন নির্বিকার মনোভাব আরও এক বার প্রমাণ করে দিল, তাঁরা বিষয়টি ধামাচাপা দিতেই বেশি তৎপর।
চাপা দেওয়ার চেষ্টা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে অবশ্য সন্দেহ থাকছেই। কারণ, কুকুর কাণ্ডের ঢেউ পৌঁছে গিয়েছে দিল্লিতেও। কেন্দ্রীয় কৃষি প্রতিমন্ত্রী সঞ্জীব বালিয়ান এ দিন ওই ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন বলে জানাচ্ছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। সঞ্জীব সাংবাদিকদের জানান, এই বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘বাংলায় পোষ্য কুকুরদের চিকিৎসার সমস্যা থাকলে কেন্দ্র একটা পশু হাসপাতাল খুলে এর সুরাহা করতে প্রস্তুত।’’
এই পরিস্থিতিতেই এ দিন দুপুরে রাজ্য বিজেপির এক দল প্রতিনিধি পিজিতে যান। ওই দলে ছিলেন ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর অসীম বসু, অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ বিজেপির বিভিন্ন নেতা ও নেত্রী। লকেট বলেন, ‘‘রাজ্যের একমাত্র সরকারি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে কেন কুকুরের ডায়ালিসিস করার তোড়জোড় চলছিল, তার জবাব দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। অবিলম্বে তদন্ত কমিটি গড়ে কুকুরের মালিকের সন্ধান দিতে হবে হাসপাতালের সুপারকে।’’ ১০ দিনের মধ্যে সন্তোষজনক উত্তর না-পেলে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন বলে জানান লকেট।
বিজেপির প্রতিনিধিরা এ দিন বেলা ১টা নাগাদ হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে সুপার মানসবাবু এবং অধিকর্ত্রী মঞ্জুদেবীর সঙ্গে কথা বলেন। এর আগেও ওই হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটেছে কি না, তা জানতে চান তাঁরা। কুকুর কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করারও দাবি জানান ওই প্রতিনিধিরা।
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অসীমবাবু বলেন, ‘‘সবাই সব জানে। অথচ ভয়ে কিছু বলছে না। বাংলার মানুষ জবাব চান। ১০ দিন পরে আমরা আবার আসব। তার মধ্যে সন্তোষজনক উত্তর না-পেলে আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানাব। প্রয়োজনে আদালতেরও দ্বারস্থ হবো।’’