শিশু-পাচার নিয়ে দিল্লির তলবের মুখে কর্তারা

দত্তক দেওয়ার নামে যে-ভাবে শিশু পাচার চলছে, তা নিয়ে তদন্ত করতে রাজ্যে এসেছিল কেন্দ্রীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। কিন্তু রাজ্যের তরফে সহযোগিতা মেলেনি বলে তাদের অভিযোগ। এই অবস্থায় রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের দিল্লিতে তলব করতে চলেছে ওই কমিশন।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৭ ০৩:০৬
Share:

দত্তক দেওয়ার নামে যে-ভাবে শিশু পাচার চলছে, তা নিয়ে তদন্ত করতে রাজ্যে এসেছিল কেন্দ্রীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। কিন্তু রাজ্যের তরফে সহযোগিতা মেলেনি বলে তাদের অভিযোগ। এই অবস্থায় রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের দিল্লিতে তলব করতে চলেছে ওই কমিশন।

Advertisement

কমিশন সূত্রের খবর, এই বিষয়ে শুনানির জন্য প্রয়োজনে এই রাজ্যের পাঁচ-ছ’টি জেলার সমাজকল্যাণ আধিকারিক এবং জেলাশাসকদের দিল্লিতে তলব করা হতে পারে। তার পরে রাজ্যের কর্তাদের কাছে থেকে পাওয়া নথিপত্র যাচাই করে দরকার পড়লে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে আদালতে যেতে পারে কমিশনই।

জলপাইগুড়িতে দত্তক দেওয়ার নামে বিদেশে শিশু পাচারের ঘটনায় তদন্তে নেমেছে সিআইডি। সেই সূত্রে একটি দত্তক প্রদানকারী সংস্থার কর্ত্রী চন্দনা চক্রবর্তী, বিজেপি নেত্রী জুহি চৌধুরী এবং দুই সমাজকল্যাণ আধিকারিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাচারকারীদের সহযোগিতা করার অভিযোগে মামলা হয়েছে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নামেও।

Advertisement

প্রথমে দুই ২৪ পরগনা এবং তার পরে জলপাইগুড়িতে শিশু পাচারের অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। দিন তিনেক আগে উত্তরবঙ্গে যান কমিশনের দুই সদস্য প্রিয়াঙ্ক কানুনগো এবং যশবন্ত জৈন। কিন্তু কমিশনের ওই কর্তাদের অভিযোগ, জেলা প্রশাসন তাঁদের সঙ্গে কোনও রকম সহযোগিতা করেনি। ‘‘গত পাঁচ বছরে ক’টি শিশুকে কবে কোথায় কী ভাবে দত্তক দেওয়া হয়েছে, জেলা প্রশাসনের কাছে আমরা তার নথি চেয়েছিলাম। কিন্তু কাগজপত্র দেওয়া তো দূরের কথা, জেলা প্রশাসন আমাদের সঙ্গে দেখা করতেই রাজি হয়নি,’’ বললেন কমিশনের প্রতিনিধি প্রিয়াঙ্ক।

কমিশনের ওই সদস্য জানান, কোনও কেন্দ্রীয় সাংবিধানিক তদন্তকারী দলের সঙ্গে এই ধরনের অসহযোগিতা পুরোপুরি বেআইনি। দিল্লি ফিরে গিয়ে কমিশনের ফুল বেঞ্চের কাছে রিপোর্ট দেওয়া হবে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে তার পরে।

কী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে?

কমিশনের এক কর্তা জানান, কেন্দ্রীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন একটি আধা বিচার বিভাগীয় সংস্থা। ফলে রাজ্যের কর্তাদের তলব করতে পারে কমিশন। একে একে কর্তাদের তলব করে শুনানি শেষ হলে কমিশন রাজ্যের শিশু পাচার এবং দত্তক দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করবে। তার ভিত্তিতে কমিশন নিজে থেকেই আদালতে গিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত চাইতে পারে বলে জানান ওই কর্তা।

কমিশনের সদস্য প্রিয়াঙ্ক বলেন, ‘‘তদন্ত কারা করবেন, আদালতই তা ঠিক করবে। তবে সিবিআই ডাকার দাবি জানাতেই পারে কমিশন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement