Dengue

সত্যিই কি গোপন করা হচ্ছে তথ্য? জানতে তদন্তে নামছে কেন্দ্র

নড্ডা জানান, পশ্চিমবঙ্গে ঠিক কত জনের মৃত্যু হয়েছে তা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে চিকিৎসকদের একাংশের মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। সঠিক তথ্য না দেওয়ার অভিযোগও এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকার তথ্য গোপন করছে বলে অভিযোগ উঠছে বেশ কিছু দিন ধরেই। এ বার সেই অভিযোগ গিয়ে পৌঁছল দিল্লির দরবারেও।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকার তথ্য গোপন করছে বলে অভিযোগ উঠছে বেশ কিছু দিন ধরেই। এ বার সেই অভিযোগ গিয়ে পৌঁছল দিল্লির দরবারেও।

চিকিৎসক সংগঠনের তরফে এই অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। অভিযোগের গুরুত্ব বিচার করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সূদনকে বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জগৎপ্রসাদ নড্ডা। ইতিমধ্যেই মন্ত্রকের যুগ্মসচিব নবদীপ রিনওয়া এবং ডিরেক্টর জেনারেল অব হেল্থ সার্ভিসের প্রতিনিধিরা বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছেন বলে মন্ত্রক সূত্রের খবর।

Advertisement

নড্ডা জানান, পশ্চিমবঙ্গে ঠিক কত জনের মৃত্যু হয়েছে তা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে চিকিৎসকদের একাংশের মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। সঠিক তথ্য না দেওয়ার অভিযোগও এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে। ‘‘স্বাস্থ্য বিষয়টি যে হেতু কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ তালিকায় রয়েছে, তাই আমরা অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে চাই,’’ বলেছেন তিনি।

মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘মমতা প্রশাসন তথ্য চাপা দিচ্ছে, এ কথা এখনই বলছি না। কিন্তু অন্য একাধিক সূ্ত্র ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সংস্থাগুলি আমাদের কাছে যে তথ্য দিয়েছে, তাতে তথ্যগত যথেষ্ট ফারাক রয়েছে। মানুষের স্বার্থেই প্রকৃত সত্যটা বেরিয়ে আসা জরুরি।’’ ওই কর্তাটি আরও বলেন, রাজ্যের প্রকৃত অবস্থা ও রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্যে ফারাকের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে চিকিৎসকদের একটি সংগঠনও।

আরও পড়ুন:চাপে কাজ করা যাচ্ছে না, প্রতিবাদ চিকিৎসকদের

রাজ্য সরকার অবশ্য এই ধরনের কোনও তদন্তের কথা বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত জানে না। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী এ দিন রাতে বলেছেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনও তথ্য নেই।’’ স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তার দাবি, ডেঙ্গি নিয়ে কোনও তথ্য গোপন করছে না রাজ্য। বরং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম, কিছু কিছু চিকিৎসক ও প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবের তরফে বিষয়টিকে অহেতুক ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো হচ্ছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রক অতীতের উদাহরণ দেখিয়ে বলছে, জ্যোতি বসুর জমানায় একবার কলেরা (ভিব্রিও কলেরি সংক্রমণ) নিয়ে এমনটাই হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চাইলেও তৎকালীন সরকার কলেরা পরিস্থিতিকে মহামারি ঘোষণা করতে চায়নি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মম্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গির জন্য মমতা প্রশাসন দায়ী এমন কথা কেউ বলছে না। এটি মশাবাহিত রোগ। এর জন্য মুখ্যমন্ত্রী দায়ী হবেন কেন? তবে রোগ যদি ব্যাপক আকার নেয় তা হলে রাজ্যের স্বার্থেই তা স্বীকার করে নেওয়া ভাল। তাতে ভবিষ্যতে ওই রোগ দমনে বা সাহায্য পাঠাতে কেন্দ্রের সুবিধা হবে।’’

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি কেরল, কর্নাটকের মতো কিছু রাজ্যগুলির বিরুদ্ধেও তথ্য চাপা দেওয়ার অভিযোগ জমা পড়েছে। বিভিন্ন রাজ্যেই যে অজানা জ্বরের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে তা স্বীকার করে নিয়েছে মন্ত্রক। এই অজানা জ্বর কী কারণে হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ডিরেক্টরেট অব ন্যাশনাল ভেক্টর বর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামকেও (এনভিবিডিসিপি)। বিভিন্ন রাজ্যের কাছেও তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে। এনভিবিডিসিপি সূত্রেও বলা হচ্ছে, ডেঙ্গির নির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকায় বেশ কিছু ক্ষেত্রে রোগীদের অজানা জ্বরে আক্রান্ত বলে লেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন