মোদীর কাছে দরবারেই মিলল বকেয়া

arrears

Advertisement

দেবজিৎ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৮
Share:

চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার কয়েক দিনের মধ্যেই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে দাবির চেয়ে বেশি টাকাই পাঠালো কেন্দ্র। খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পেও বকেয়া টাকার অনেকটাই পেয়েছে খাদ্য ভবন। তবে সর্বশিক্ষা ও আজীবিকা মিশনের বকেয়া কেন্দ্র এখনও মেটায়নি বলে রাজ্যের দাবি।

Advertisement

গত ১০ এপ্রিল সাউথ ব্লকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের বকেয়া নিয়ে একগুচ্ছ দাবি জানান মমতা। তাঁর দাবি ছিল, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে এ পর্যন্ত রাজ্যের পাওনা হয়েছে ১৫৪৬ কোটি টাকা। সেই খাতে দিন আটেক আগে কেন্দ্র পাঠিয়েছে ১৮৬০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, মমতা যা চেয়েছিলেন, তার চেয়ে ৩১৪ কোটি টাকা বেশি।

রাজ্য অবশ্য অতিরিক্ত অর্থ পাওয়ার কথা মানতে নারাজ। তাদের যুক্তি, এই প্রকল্পে গত অর্থবর্ষে ১৮ কোটি ৩৩ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তা ছাপিয়ে হয়েছে ২৩ কোটি ৮ লক্ষ। কেন্দ্র সেই অতিরিক্ত শ্রমদিবসের টাকাটাই দিয়েছে। রাজ্যের প়ঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও বলছেন, ‘‘কেন্দ্র আমাদের দয়া করেনি। ভাল কাজের নিরিখেই আমরা টাকা পেয়েছি।’’

Advertisement

মোদী-মমতা বৈঠকের সুবাদে বকেয়া টাকা পেয়েছে রাজ্যের খাদ্য দফতরও। এক খাদ্যকর্তা বলেন, ‘‘খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে বকেয়া চেয়ে একাধিক বার চিঠি লেখা হয়েছে। আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি। মুখ্যমন্ত্রীর বলার পর গত সপ্তাহে কিছু টাকা ঢুকেছে।’’ কত টাকা? খাদ্য দফতরের হিসেবে, কেন্দ্রের কাছে ওই খাতে তাদের বকেয়া ছিল ১৫৮৪ কোটি টাকা। দু’দফায় কেন্দ্র ৫৬৫ কোটি টাকা পাঠিয়েছে। এই নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘টাকা পেয়েছি ঠিকই। কিন্তু এখনও তো হাজার কোটি টাকা বাকি রইল!’’

রাজ্য অবশ্য বলছে, পঞ্চায়েত ও খাদ্য দফতরের কপালে শিকে ছিঁড়লেও সর্বশিক্ষা অভিযানে বকেয়া ১৩৭২ কোটি টাকা এখনও মেটায়নি কেন্দ্র। যদিও কেন্দ্রের বক্তব্য, রাজ্য আগের টাকা খরচের কোনও অডিট রিপোর্ট দেয়নি, কোনও হিসেবও দেয়নি। তাই টাকা পাঠানো যায়নি। একই ভাবে আজীবিকা মিশন প্রকল্পে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি মতো রাজ্যের বকেয়া হয়েছে ৩৪১ কোটি টাকা। তার কানাকড়িও পায়নি রাজ্য। কেন্দ্রের যুক্তি, আজীবিকা প্রকল্পে আগের দেওয়া টাকাই খরচ করতে পারেনি রাজ্য। তাই নতুন করে টাকা পাঠানো হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ঋণের সুদ ছাড়ের আর্জিও জানিয়েছিলেন মমতা। তাঁর বক্তব্য ছিল, রাজ্যের আয় ৪০ হাজার কোটি টাকা। অথচ, আগামী বছর কেন্দ্রীয় ঋণের উপরে স্রেফ সুদই দিতে হবে ৪৭ হাজার কোটি টাকা। সাময়িক ভাবে ওই সুদ দেওয়া বন্ধ হলে রাজ্যে উন্নয়নের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে। দিল্লি অবশ্য এ নিয়ে কিছু জানায়নি বলে নবান্নের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন