দার্জিলিং ও বসিরহাট নিয়ে গত ক’দিন ধরেই বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছিলেন তিনি। সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে প্রকাশ্য সভায় সরাসরি কেন্দ্রের বিরুদ্ধেই চক্রান্তের অভিযোগ আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘সরকারের কাজ জনগণকে সাহায্য করা, হিংসায় মদত দেওয়া নয়। রাজ্য সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত। কেন্দ্রীয় সরকারও তাই। তা হলে কেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্র চক্রান্ত করবে?’’
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুলিশ পাঠিয়ে দার্জিলিঙের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সিআরপি-র মতো দক্ষ বাহিনী পেলে যে সেই কাজ অপেক্ষাকৃত সহজ হতো, তা আগেই স্বীকার করেছেন মমতা। শনিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন, ‘‘সময়মতো সিআরপিএফ পেলে অশান্তি এতটা গড়াত না।’’ এবং এর পিছনে কেন্দ্রের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। মমতা এ দিন বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও দার্জিলিঙে সিআরপি দেওয়া হয়নি। শুনলাম আজ (সোমবার) দিল্লিতে একটা মিটিং হয়েছে। বলেছে ঝাড়গ্রাম থেকে দু’কোম্পানি সিআরপি তুলে ওখানে পাঠাতে। কেন? ফের ঝাড়গ্রামে গোলমাল বাধানোর চেষ্টা?’’
আরও পড়ুন: ডোমের পদের জন্য দরখাস্ত গবেষকের
এক দিকে পাহাড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো নিয়ে অসহযোগিতা, অন্য দিকে বসিরহাটে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় উস্কানি— এই দুই নিয়ে এ দিন কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মমতা। নন্দকুমারের জনসভায় তিনি বলেন, ‘‘সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। বিএসএফ সীমান্ত পাহারা দেয়। বসিরহাটে গোলমাল লাগতে কী করে সীমান্ত খুলে গেল?’’ সীমান্ত পেরিয়েই কিছু লোক এ পারে এসে যে দাঙ্গা করেছিল, সে ব্যাপারে নিশ্চিত মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আরও অভিযোগ, এ ব্যাপারে উস্কানি দিয়েছে বিজেপি-ই। মমতা এ দিন বলেন, ‘‘দাঙ্গা লাগানো আর জ্বালিয়ে দেওয়া, পুড়িয়ে দেওয়া ছাড়া বিজেপির কাজ নেই। ওদের থেকে সাবধান।’’
দু’দিন আগে নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন মমতা। বলেছিলেন, উনি (মোদী) বিদেশে শান্তির কথা বলছেন, আর দেশে আগুন লাগাচ্ছেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘তুমি কি শুধু দালালি করে বেড়াবে? আগুন লাগাবে? যাও না বিদেশে যাও। আমার কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু আমাকে গাল দিয়ে কিছু হবে না।’’ মমতার মতে, তাঁর সরকারের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে না পেরেই কেন্দ্র হিংসা ছড়াচ্ছে, চক্রান্ত করছে।