সুন্দরবনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। নিজস্ব চিত্র।
পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপহার সুন্দরবনের উন্নয়নের ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকার অন্যায় করছে বলে অভিযোগ করলেন কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। সুন্দরবন জুড়ে পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা এবং অব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন তিনি। পাল্টা শাসক দলও রাজ্য সরকারের টাকা আটকে রাখা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে তোপ দেগেছে।
মাস কয়েকে পরে রাজ্যে বিধানসভা ভোট। আর সেই ভোটের জন্য ইতিমধ্যেই ভূপেন্দ্রকে পশ্চিমবঙ্গে 'নির্বাচন প্রভারী' হিসেবে নিয়োগ করেছে বিজেপি। ‘জাতীয় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্প’ এবং ‘প্রজেক্ট এলিফ্যান্ট স্টিয়ারিং কমিটি’-র বৈঠকে অংশ নিতে রবিবার সুন্দরবনের গোসাবায় আসেন তিনি। অন্য একাধিক রাজ্যের আধিকারিকেরাও এই বৈঠকে ছিলেন।
বৈঠক শেষে ভূপেন্দ্র জানান, সুন্দরবন পর্যটকদের কাছে আকর্ষক হলেও এই হেরিটেজ সাইটের পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্য সরকার তৎপর নয়। স্থানীয়দের আয়ের একাধিক সম্ভাবনা থাকলেও সঠিক পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা একাধিক পরিকল্পনা করেছি। মন্ত্রকের তরফে সঠিক পদক্ষেপ করা হবে।” যদিও কী পরিকল্পনা তা তিনি খোলসা করেননি। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগকে নস্যাৎ করে সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরার পাল্টা অভিযোগ, ‘‘পরিকাঠামো উন্নয়নের পথে বাধা দিচ্ছে কেন্দ্রই। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বিশ্ব ব্যাঙ্কের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রাজ্য সরকার যে পরিকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগী হয়েছে, তাতেও ছাড়পত্র দিচ্ছে না কেন্দ্র। সর্বোপরি কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক রাজ্য বন দফতরের সঙ্গে সহযোগিতা করছে না।’’ তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক বলেন, “এরা বাংলাকে বঞ্চনা করে। বাংলার প্রাপ্য টাকা দেয় না। সুন্দরবনের মানুষ জানেন, কাজ করা সত্ত্বেও এদের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে। ওরা আগে অন্তত একটি প্রকল্পে বাংলার প্রাপ্য টাকা দিন, তারপর সুন্দরবনে এসে সুন্দরবনের উন্নয়ন নিয়ে কথা বলবেন।”
সম্প্রতি ট্রেনের ধাক্কায় সাতটি হাতির মৃত্যু হয়েছে। রেললাইনে হাতি মৃত্যু নিয়ে প্রজেক্ট এলিফ্যান্ট বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে এ দিন জানিয়েছেন ভূপেন্দ্র। রেল দুর্ঘটনায় হাতির মৃত্যু কমাতে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক এক গুচ্ছ পদক্ষেপ করতে চলেছে। তাঁর কথায় “হাতি মৃত্যু ঠেকাতে সারা দেশে ১১০০র বেশি পয়েন্টকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ট্রেন চালকদের প্রশিক্ষণে জোর দেওয়া হচ্ছে। হাতি মৃত্যু আটকাতে সমন্বয় বাড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। ডিভিশনাল বন আধিকারিক, জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের মধ্যে একটি গ্রুপ তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"
দিল্লির দূষণ নিয়েও এ দিন প্রশ্নের মুখে পড়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন, “সংসদে আমি তো সব প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত ছিলাম। বিরোধীরা আমার জবাব শুনতে চায়নি।” দিল্লির দূষণের প্রশ্নে আরাবল্লি পর্বত এলাকায় খনন নিয়ে বিতর্ক দানা বাদে। মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব যদিও এক্ষেত্রে আরাবল্লির খনন সংক্রান্ত কোনও আইনের শিথিল করা হয়নি বলে দাবি করেছেন। মন্ত্রী জানান, আরাবল্লির ভারতের চার রাজ্যে বিস্তৃত। এর ৯০ শতাংশ সংরক্ষিত এলাকার মধ্যে রয়েছে। দিল্লিতে কোনও ভাবে আরাবল্লির খননের অনুমতি নেই।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে