BJP

বাংলার দুই ‘সহজ’ আসনে বাড়তি নজর বিজেপির, ছ’দিনের জন্য রাজ্য সফরে মোদীর দূত কপিল

গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ১৮টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। এ বার নতুন ১৯টি আসনে নজর। তার মধ্যেও কয়েকটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। দলের হিসাবে এগুলি ‘অতি সহজ’ আসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৫৩
Share:

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কপিল পাতিল। ফাইল চিত্র।

রাজ্যে বিভিন্ন পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ১০০ দিনের কাজের পাশাপাশি, গ্রামীণ এলাকায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়েও বিস্তর গোলমালের অভিযোগ করছে বিজেপি। রাজ্যে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা দুই জেলায় এসেছেন সরজমিনে পরিস্থিতি দেখতে। পূর্ব মেদিনীপুর ছাড়াও সেই তালিকায় রয়েছে মালদহ। সেই আবহেই মালদহে আসছেন কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী কপিল পাতিল। তবে কোনও অভিযোগের প্রেক্ষিতে নয়। তিনি আসছেন লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি দেখতে। তাঁর ছ’দিনের সফরে তিনি মূলত দেখবেন মালদহ দক্ষিণ ও নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর আসনের নির্বাচন প্রস্তুতি। এর মধ্যে অবশ্য আসানসোল ও বোলপুর আসন নিয়েও একটি বৈঠক করবেন তিনি।

Advertisement

২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সময় বিজেপি জয় পেয়েছিল ৩০৩ আসনে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিজেপির লক্ষ্য, আসন আরও বাড়ানো। সেই লক্ষ্যে বাংলার ১৯টি আসন বেছেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। গত বার বিজেপি ১৮টি আসন জেতায় অধরা ছিল ২৪টি। তার মধ্যে ‘খুব সহজ’ কাঁথি এবং ‘খুব কঠিন’ হিসাবে বাদ রয়েছে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, জঙ্গিপুর এবং মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট এবং বারাসত। যে ১৯টি আসন বিজেপি বেছেছে, তার মধ্যে একটি সহজের তালিকাও রয়েছে। সেখানেই রয়েছে মালদহ দক্ষিণ এবং কৃষ্ণনগর।

গত লোকসভা নির্বাচনে মালদহ দক্ষিণে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দিয়েছিল বিজেপি। প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী কংগ্রেসের আবু হাসেন খান চৌধুরীর কাছে হেরেছিলেন ৮ হাজার ২২২ ভোটে। এর পরে বিধানসভা নির্বাচনে এই লোকসভারই অন্তর্গত ইংরেজবাজার থেকে জিতেছিলেন শ্রীরূপা। সব ক’টি আসন মিলিয়ে বিজেপি পেয়েছিল ৩০.৫১ শতাংশ ভোট। সেখানে তৃণমূল পায় ৫৩.২৭ শতাংশ ভোট। যদিও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে বিজেপি ইংরেজবাজার ছাড়াও মানিকচক, মোথাবাড়ি, বৈষ্ণবনগরে এগিয়ে ছিল। এই সব কারণেই বিজেপি মালদহ দক্ষিণকে ‘সহজ’ আসন বলে মনে করছে।

Advertisement

অন্য দিকে, কৃষ্ণনগর আসনে ১৯৯৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় জিতেছিলেন। তবে সে বার তৃণমূলের সঙ্গে জোট ছিল বিজেপির। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী কল্যাণ চৌবে তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রের কাছে হেরেছিলেন ৬৩ হাজার ২১৮ ভোটে। তবে তেহট্ট, কৃষ্ণনগর উত্তর, কৃষ্ণনগর দক্ষিণ আসনে এগিয়ে ছিল বিজেপি। আবার ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল অনুযায়ী কৃষ্ণনগর লোকসভার অন্তর্গত সাতটি আসনের মধ্যে কৃষ্ণনগর উত্তরে বড় ব্যবধানে জয় ছাড়া বাকি ছ’টিতে হেরেছে। এ সব সত্ত্বেও বিজেপি মনে করছে, এখন থেকে সময় দিলে মালদহ দক্ষিণের মতো কৃষ্ণনগর আসনেও ২০২৪ সালে জয় সম্ভব।

১৯টি আসন বাছার পরে সেগুলির সংগঠন দেখার জন্য আগেই বিজেপি নেতৃত্ব এক জন করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেন। এই দু’টি কেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছেন সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন দফতরের মন্ত্রী বীরেন্দ্রকুমার খটিক। তিনি আগেই এই দুই কেন্দ্রে ঘুরে গিয়েছেন। রিপোর্টও জমা দিয়েছেন। এ বার আসছেন কপিল। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতেই তিনি কলকাতায় চলে আসবেন। মঙ্গলবার ভোরে বন্দে ভারতে চেপে পৌঁছবেন মালদহ। কলকাতা থেকে মালদহ সফরও থাকবে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে। এর পর দু’দিন মালদহ দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকায় যাবেন তিনি। জেলা থেকে বুথ, বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। কর্মীদের বাড়িতে খাওয়াদাওয়া থেকে দলের সব মোর্চার সঙ্গে বৈঠকও থাকছে কর্মসূচিতে।

কপিলের এর পরের গন্তব্য হবে কৃষ্ণনগর। সেখানেও একই রকম বৈঠক ও সফর থাকবে। ছ’দিনের সফর সেরে আগামী শনিবার রাতে কলকাতা হয়ে মুম্বই যাবেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা কপিল। মাঝে বৃহস্পতিবার ফরাক্কা থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আসানসোল ও বোলপুর লোকসভা এলাকার বিজেপি নেতাদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক করার কথা। মালদহে বিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তী এবং কৃষ্ণনগরে মকরসংক্রান্তি উপলক্ষে সামাজিক কর্মসূচিও থাকতে পারে। কয়েকটি জায়গায় বাড়ি বাড়ি প্রচারেও তাঁকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য বিজেপির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন