সুরেশ প্রভু। ফাইল ছবি।
ঘুরে গিয়েছেন অমিত শাহ। আসছেন নরেন্দ্র মোদী। তার মাঝেই বাংলার বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য কেন্দ্রের একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা শুনিয়ে গেলেন দেশের শিল্প, বাণিজ্য ও অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী সুরেশ প্রভু। বাংলায় শিল্পের দ্রুত বিকাশ, বাংলা থেকে রফতানি বাড়ানো, কলকাতা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ এবং এ রাজ্যে এয়রক্র্যাফ্ট ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট গড়ে তোলার বিষয়ে ভাবছে নরেন্দ্র মোদীর মোদীর সরকার। জানিয়েছেন সুরেশ প্রভু।
নরেন্দ্র মোদী চলতি মাসের ১৬ তারিখ মেদিনীপুরে কৃষক সমাবেশ করবেন। এই ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যের রাজনৈতিক শিবিরে তৎপরতা বেড়েছে। বিজেপি-র তৎপরতা আরও বেড়েছে। শুক্রবার রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে এসে সাংবাদিক বৈঠক করে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতা শাহনওয়াজ হুসেন। সুরেশ প্রভু এসেছিলেন শনিবার। রবিবার তিনিও বিজেপির রাজ্য দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করলেন। সেখান থেকেই শোনালেন বাংলাকে নিয়ে কেন্দ্রের ‘পরিকল্পনা’র কথা।
‘‘বাংলা এক সময় গোটা দেশের আর্থিক রাজধানী ছিল। আমরা চেষ্টা করছি যাতে পশ্চিমবঙ্গে আবার সেই আর্থিক সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনা যায়।’’ রবিবারের সাংবাদিক বৈঠকে এ কথাই বলেন প্রভু। পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক ও বাণিজ্যিক বিকাশের জন্য কেন্দ্র ঠিক কী কী পরিকল্পনা নিয়েছে, তার খুব স্পষ্ট রূপরেখা প্রভুর কথা থেকে মেলেনি। তবে কলকাতা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ এবং বিমান শিল্পের বিকাশ নিয়ে প্রভু অপেক্ষাকৃত স্পষ্ট ভাবেই জানিয়েছেন কেন্দ্রের ভাবনার কথা।
সুরেশ প্রভু এ দিন বলেছেন, কলকাতা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁর ইঙ্গিত, কলকাতা বিমানবন্দরের ব্যস্ততা অদূর ভবিষ্যতেই আরও বাড়বে এবং তাতে এই বিমানবন্দর তার সক্ষমতার চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে যাবে। তাই বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার জন্য রাজ্যের কাছ থেকে জমি চাওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই, জানিয়েছেন প্রভু।
শুধু বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ নয়, পশ্চিমবঙ্গে বিমান তৈরি এবং ড্রোন তৈরির কারখানা করার কথাও কেন্দ্র ভাবছে বলে তিনি এ দিন জানিয়েছেন। আসামরিক বিমান পরিবহণে স্বনির্ভর হতে ভারতকে এ বার দেশের মাটিতেই বিমান তৈরি করতে হবে বলে সুরেশ প্রভু অন্য একটি অনুষ্ঠানেও মন্তব্য করেছেন। বিজেপি অফিসে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, বিমান ও ড্রোন তৈরি এবং বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতির ইউনিট স্থাপন করলে প্রচুর কর্মসংস্থান হওয়া সম্ভব। ওই সব কারখানা কী ভাবে পশ্চিমবঙ্গে করা যায়, নরেন্দ্র মোদীর সরকার তা গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে বলে সুরেশ প্রভু জানান।
আরও পড়ুন: নজরে লোকসভা, বিজেপি-র ওপর চাপ বাড়াচ্ছেন নীতীশ
পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক অবস্থানের কথা মাথায় রেখে এ রাজ্যের জন্য শিল্প ও বাণিজ্যের রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এ দিন জানিয়েছেন। বাংলা থেকে রফতানি বাড়ানোর উপরে কেন্দ্র জোর দিতে চাইছে বলে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন। বাংলার বিভিন্ন জেলায় যে সব বিশেষ হস্তশিল্প রয়েছেন, সেগুলিকে নিয়েও কেন্দ্রের বিশেষ ভাবনার কথা জানিয়েছেন প্রভু। যে জেলা যে উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত, সেই জেলাকে সেই পণ্যের ‘জিওগ্রাফিক্যাল আইডেনন্টিফিকেশন’ দিয়ে দেওয়া হবে বলে প্রভু জানিয়েছেন। এর ফলে ওই পণ্য দেশের যে প্রান্তেই ব্যবহৃত হোক, লাভ পাবেন সংশ্লিষ্ট জেলার কারিগররাই, বলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।