কাঁথির পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিজেপি চুপচাপ বসে থাকবে না— মঙ্গলবার আঙুল নাড়াতে নাড়াতে দিল্লির সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন দলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র সম্বিৎ পাত্র। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই খবর আসে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ফোন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কাঁথির পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। বুধবার আরও চড়ল সেই উত্তাপ। এফআইআর-এর প্রতিলিপি এবং হিংসার ছবি রাজ্য বিজেপির কাছ থেকে চেয়ে পাঠাল রাজনাথের মন্ত্রক।
বিজেপি সূত্রের খবর, ফোনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনাথ সিংহের কথোপকথন খুব একটা সৌজন্যমূলক ভঙ্গিতে হয়নি মঙ্গলবার। অমিত শাহের জনসভা মিটতেই যে ভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কাঁথি, তার প্রেক্ষিতে কোনও পদক্ষেপ করার বার্তা বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকেই রাজনাথের কাছে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। ফলে রাজনাথ গভীর উদ্বেগে ছিলেন এবং মমতার সঙ্গে কথোপকথনেও সে উদ্বেগের প্রকাশ ছিল।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন পেয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার মোটেই খুশি হননি। কাঁথির পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মঙ্গলবার রাজনাথ সিংহ যে ভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বলে খবর, তা আসলে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েই প্রশ্ন তোলা। অতএব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চুপচাপ শোনেননি রাজনাথ সিংহের কথা। তিনি পাল্টা অভিযোগ তোলেন বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। রাজনাথ যেন নিজের দলের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণে রাখেন— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ বিরক্তির সঙ্গেই এ কথা রাজনাথকে বলেন বলে খবর। ফলে রাজনাথ-মমতার কথোপকথন বেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: অমিত শাহের সভা শেষ হতেই রণক্ষেত্র কাঁথি, মমতাকে ফোন উদ্বিগ্ন রাজনাথের
বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, রাজনাথ সিংহের ফোনটাকে তিনি ভাল ভাবে নেননি। তাঁকে যে ভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে, তা তিনি মেনে নেবেন না— বীরভূমের রামপুরহাটের এক জনসভা থেকে বুধবার ঝাঁঝের সঙ্গে এ কথা শুনিয়ে দেন তিনি।
ফোনের কথোপকথনে মমতাকে রাজনাথ বলেছিলেন, অশান্তি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু সেটুকু বলেই যে কেন্দ্রীয় সরকার নিশ্চিন্ত হতে পারেনি, তা স্পষ্ট হয়েছে বুধবার দুপুরে। জানা গিয়েছে যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কথা বলেছে বিজেপি নেতাদের সঙ্গেও। কাঁথিতে দলীয় কর্মীদের উপরে হামলা হয়েছে বলে যে অভিযোগ বিজেপি করছে, সেই মর্মে ওই এলাকারই কোনও থানায় অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে বিজেপি নেতৃত্বকে। সেই অভিযোগের প্রতিলিপি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠাতেও বলা হয়েছে। মঙ্গলবারের হিংসাত্মক পরিস্থিতির ছবি এবং ভিডিয়োও পাঠাতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রীকান্তকে মাত্র দু’দিন হাতে পাচ্ছে সিবিআই
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু স্বীকার করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই তৎপরতার কথা। তিনি বলেছেন, ‘‘হিংসার ছবি আমরা ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠিয়ে দিয়েছি। অভিযোগের প্রতিলিপিও পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।’’
(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খবর এবং বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেবাংলায় খবরপেতে চোখ রাখুন আমাদেররাজ্যবিভাগে।)