থানা থেকে ছাড়া পাওয়ার পর মিছিল করে ফিরছেন কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্যরা। —নিজস্ব চিত্র
মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ (ডিয়ারনেস অ্যালাওয়েন্স) নিয়ে সরকারি কর্মীদের ক্ষোভের আঁচ এবার পৌঁছে গেল নবান্নেও। সিপিএমের কর্মী সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির আন্দোলনের জেরে দিনভর উত্তপ্ত হয়ে রইল রাজ্য সচিবালয়। বৃহস্পতিবার কাজ বন্ধ করে নবান্নের মধ্যেই স্লোগান দেন সংগঠনের সদস্যরা। নবান্নের সামনেও স্লোগান দেন অনেকে। কো-অর্ডিনেশন কমিটির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহ-সহকর্মীদের আটক করে শিবপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। সন্ধের দিকে অবশ্য বিনা শর্তে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
নবান্ন সূত্রে খবর, এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্যরা নবান্নের কাজকর্ম বন্ধ করে দেন। ভিতরেই চলতে থাকে ক্ষোভ-বিক্ষোভ এবং স্লোগান। এক দল আবার নবান্ন থেকে বেরিয়ে সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, ষষ্ঠ বেতন কমিশনের কাজ নিয়ে টালবাহানা চলছে। কর্মীদের ডিএ বাড়ানো নিয়েও টানাপড়েন অব্যাহত। সেই সবের প্রতিবাদেই তাঁদের বিক্ষোভ, দাবি সংগঠনের নেতাদের।
নবান্ন থেকে খবর দেওয়া হয় শিবপুর থানায়। পুলিশকর্মীরা এসে বিজয়শঙ্কর-সহ ১৮ জনকে থানায় তুলে নিয়ে যান। এই খবর পেয়ে শিবপুর থানার সামনে জড়ো হন প্রায় সাড়ে পাঁচশো কর্মী। দুপুর থেকে সন্ধে পর্যন্ত তাঁরা থানার সামনেই ছিলেন। সন্ধের দিকে আটক কর্মীদের বিনা শর্তে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
শিবপুর থানায় আটক কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা-কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র
আরও পড়ুন: শান্তিপুরে বিষ মদে মৃত্যু বেড়ে ১২, মুখ্যমন্ত্রীর ধমক পুলিশকে
ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মূল মামলাটি ছিল আইএনটিইউসি অনুমোদিত কংগ্রেসের সরকারি কর্মীদের সংগঠন কনফেডারেশন-এর। এ দিনের আন্দোলনে কো-অর্ডিনেশন কমিটির পাশে দাঁড়িয়েছে সেই কনফেডারেশন-ও। সংগঠনের পক্ষে সুবীর সাহা বললেন, ‘‘আমরা বাম আমলেও রাজ্য সচিবালয়ে আন্দোলন করেছি।এ ভাবে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়নি।
আরও পড়ুন: সেক্স সাইটে ফেক প্রোফাইল, যাদবপুরে দুই মহিলার দরজায় হাজির ‘কাস্টমার’!
‘ডিএ কর্মীদের অধিকার, সরকারের দয়ার দান নয়’— এই পর্যবেক্ষণ করে ডিএ মামলা স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালে (স্যাট) পাঠায় কলকাতা হাইকোর্ট। স্যাট-এও শুনানি শেষ হয়েছে। কিন্তু শুনানিতে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার বিরোধিতা করে রাজ্য সরকার। তার পর থেকেই ক্ষোভ বাড়ছিল রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মধ্যে। এমনকি, শাসক দল তৃণমূলের কর্মী সংগঠনও উষ্মা গোপন রাখেনি। বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভ-স্লোগান সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)