Mamata Banerjee’s North Bengal Visit

‘সেতু ভেঙে কারও মৃত্যু হয়নি’! উত্তরবঙ্গ নিয়ে মোদীর বক্তব্যে পাল্টা চ্যালেঞ্জ মমতার, দাবি ইন্দো-ভুটান নদী কমিশনেরও

এক রাতের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৫ জনের। রাস্তায় ধস নেমেছে, ভেঙে পড়েছে সেতু। অনেক বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দুর্যোগের পর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার উত্তরবঙ্গে যান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে আছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:০৭
Share:

(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)।

সেতু ভেঙে উত্তরবঙ্গে কারও মৃত্যু হয়নি! সোমবার বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এমনই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘দার্জিলিঙে সেতু দুর্ঘটনায় প্রাণহানির’ কথা উল্লেখ করে এক্স পোস্ট করেছিলেন। তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন উত্তরবঙ্গে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের কারওই সেতু ভাঙার কারণে হয়নি। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আবার এক বার ইন্দো-ভুটান নদী কমিশনের দাবি জানালেন। শুধু তা-ই নয়, মমতা আরও জানান, এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছিলেন। কিন্তু কোনও জবাব পাননি।

Advertisement

এক রাতের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৫ জনের। রাস্তায় ধস নেমেছে। ভেঙে পড়েছে সেতু। অনেক বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দুর্যোগের পর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার উত্তরবঙ্গে যান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে আছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। কয়েকটি বিপর্যস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। কথা বলেন স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে। শুধু তা-ই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গেও দেখা করেন মমতা। পরিস্থিতি খতিয়ে তিনি ইন্দো-ভুটান নদী কমিশনের বিষয়টি তুলে ধরেন। তাঁর কথায়, ‘‘ইন্দো-ভুটান নদী কমিশন হওয়া উচিত, না হলে এর পরিণতি ভুগতে হবে উত্তরবঙ্গকে।’’ কেন ইন্দো-ভুটান নদী কমিশনের প্রয়োজন রয়েছে, তার ব্যাখ্যাও দেন মুখ্যমন্ত্রী।

পশ্চিমবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতির জন্য মমতা বার বার কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, ডিভিসির ছাড়া জলে ভেসে যায় দক্ষিণবঙ্গ। এ ছাড়া, নেপাল, ভুটান, সিকিমে বৃষ্টি হলে ভুগতে হয় উত্তরবঙ্গকে। সোমবার আবার এক বার সেই অভিযোগই তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, প্রয়োজন মতো ফরাক্কা বাঁধ খনন করা হয় না। মমতার দাবি, ‘‘ভুটানে ৫৬টি নদী রয়েছে। সিকিমে ৪০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। তাই সমস্ত জল এখানে (উত্তরবঙ্গ) আসে।’’

Advertisement

পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সেতু ভেঙে কেউ মারা যাননি। এ ব্যাপারে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আপনারা যা শুনেছেন, তা সত্য নয়। কেউ ভুল তথ্য দিয়েছেন।’’ দুর্যোগের কারণে উত্তরবঙ্গে যে সেতুগুলি ভেঙেছে, তা আবার করে তৈরি করা হবে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘যে সেতুগুলি ভেঙেছে, সেগুলি ছোট। আমাদের মিরিক সেতু নির্মাণ করতে হবে।’’ মঙ্গলবার ওই এলাকা পরিদর্শনে যাবেন বলে জানান মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘এই সেতু তৈরি করতে অন্তত এক বছর সময় লাগবে। আপাতত, একটি অস্থায়ী সেতু তৈরি করা হচ্ছে। তবে সেই সেতুও তৈরি করতে ২০ দিন সময় লাগবে।’’

উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতিকে ‘ম্যান মেড’ বলে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার উত্তরবঙ্গ যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে তিনি বলেন, ‘‘ভুটান এবং সিকিমের জলে উত্তরবঙ্গে বন্যা হয়েছে। সেই সঙ্গে ১২ ঘণ্টায় টানা ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অতি দুর্যোগের সঙ্গে ম্যান মেড বন্যা। এত জল যাবে কোথায়? আমরা বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডের জল সহ্য করি। আর কত করব?’’ উত্তরবঙ্গে পৌঁছে পশ্চিমবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা বলেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্র আমাদের বন্যা ব্যবস্থাপনার জন্য কোনও অর্থ দেয় না। তারা গঙ্গা পরিষ্কারের জন্য গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানও বন্ধ করে দিয়েছে। এটা বাংলার প্রতি বৈষম্য এবং বঞ্চনা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement