কালিম্পঙে স্কুলপড়ুয়াদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: রবিন রাই।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ নির্বাচনের মুখে বিধিভঙ্গের অভিযোগের মুখে পড়লেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মঙ্গর সম্প্রদায়ের জন্য (যাঁদের পদবী মূলত থাপা) একটি উন্নয়ন বোর্ড গড়ার ঘোষণা করেন তিনি। কালিম্পঙে লেপচা উন্নয়ন বোর্ডের চতুর্থ বর্ষ পূর্তির সভায় মুখ্যমন্ত্রী এই ঘোষণার পর মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ফেসবুকে বিস্তারিত জানান, লেপচা, তামাঙ্গ-সহ পাহাড়ের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জন্য তিনি কত টাকা বরাদ্দ করছেন।
এর পরেই নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগে সরব হয় বিরোধীরা। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা শিলিগুড়ির মেয়র, সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এলাকায় কয়েক হাজার মঙ্গর পরিবার বসবাস করেন। মঙ্গর উন্নয়ন বোর্ড ঘোষণায় তাঁরা প্রভাবিত হতে পারেন।’’ অশোকবাবু আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জানাবেন। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘নির্বাচন কমিশন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আমরাও ভোট বিধি মানব না।’’
বিজেপি-র শিলিগুড়ি জেলা সভাপতি রথীন বসু বলেন, ‘‘সুষ্ঠু গণতন্ত্রের স্বার্থে ভোট চলাকালীন এমন কোনও ঘোষণা করা উচিত নয়। এতে বিভ্রান্তি হতে পারে, ভোটাররা প্রভাবিতও হতে পারেন।’’ তবে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হবে কিনা, তা রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করা হবে।
এ দিন কালিম্পঙের মেলা গ্রাউন্ডে মায়েল লায়াং লেপচা ডেভলপমেন্ট বোর্ডের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী যোগ দেন। সেখানেই তিনি মঙ্গরদের জন্য ওই ঘোষণা করেন। পরে তাঁর ফেসবুক-বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, তিনি এ দিন লেপচা পরিবারগুলির আবাসনের জন্য
১০ কোটি টাকা দিয়েছেন। ইয়ুথ হস্টেল তৈরির জন্য লেপচা বোর্ড ও তামাঙ্গ বোর্ডকে ৫ কোটি টাকা করে দিয়েছেন। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এলাকায় লেপচা ও তামাঙ্গ সম্প্রদায়ের মানুষও আছেন। ফলে এ দিনের ঘোষণায় ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ করবে কী? মোর্চার মুখপাত্র বিনয় তামাঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘নির্বাচনী বিধিভঙ্গের বিষয়ে ভাল জানা নেই।’’ তবে মোর্চা নেতা বিমল গুরুঙ্গ এ দিন দিল্লিতে অভিযোগ করেন, পাহাড়ে উন্নয়নের পরিবর্তে একের পর
এক বোর্ড গঠন করে বিভাজনের রাজনীতি করছেন মমতা। ‘‘মানুষ যে আমাদের সঙ্গে আছে তা মহকুমা পরিষদের ভোটে জিতলেই প্রমাণ হয়ে যাবে,’’ বলেন গুরুঙ্গ।