আর্সেনিক নিয়ে মুখ্যসচিবের রিপোর্ট তলব

রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আর্সেনিক দমনের নামে কিছু যন্ত্র বসিয়েই দায় সারা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই সব যন্ত্র এখনও সমর্থ কি না, তা যাচাই করা বা রক্ষণাবেক্ষণের বালাই নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৬ ০৩:৪৫
Share:

রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আর্সেনিক দমনের নামে কিছু যন্ত্র বসিয়েই দায় সারা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই সব যন্ত্র এখনও সমর্থ কি না, তা যাচাই করা বা রক্ষণাবেক্ষণের বালাই নেই।

Advertisement

এই অবস্থায় কলকাতার জাতীয় পরিবেশ আদালত জানতে চায়, রাজ্যে আর্সেনিক-দূষিত জলের সব নলকূপ বন্ধ করা হয়েছে কি না এবং ওই সব এলাকায় বিকল্প পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না। এই ব্যাপারে চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের মুখ্যসচিবের হলফনামা চেয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। আর্সেনিক শোধন যন্ত্র থেকে যে-দূষিত বর্জ্য বেরোচ্ছে, তা কী ভাবে নষ্ট করা হচ্ছে, তা-ও জানাতে হবে হলফনামায়।

রাজ্যের আর্সেনিক দূষণ নিয়ে কলকাতার জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। এ দিন তিনি বলেন, গাইঘাটা ও তেঘরিয়া এলাকায় ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (নিরি) এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বিভিন্ন নলকূপের জল পরীক্ষা করে সহনমাত্রার চেয়ে বেশি আর্সেনিক পেয়েছে। প্রশ্ন উঠছে আর্সেনিক শোধন যন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও। ওই সব যন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও রিপোর্ট চেয়েছে আদালত।

Advertisement

কেন্দ্রীয় ভূ-জল পর্ষদের তৈরি একটি রিপোর্ট এ দিন পরিবেশ আদালতে জমা দেন সুভাষবাবু। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে নলকূপের জল থেকে আর্সেনিক দূর করতে যে-সব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলি অনেক ক্ষেত্রেই কাজে দেয়নি। দেখা গিয়েছে, আর্সেনিক দূরীকরণের যন্ত্র থেকে যে-জল বেরোচ্ছে, তাতে আর্সেনিকের মাত্রা প্রতি লিটার জলে ০.০১ মিলিগ্রামের বেশি। আর্সেনিকের সহনমাত্রা প্রতি লিটার জলে ০.০১ মিলিগ্রাম। আর্সেনিক প্রভাবিত ছ’টি জেলায় সমীক্ষা চালিয়ে কেন্দ্রীয় ভূ-জল পর্ষদ দেখেছে, যেখানে যেখানে আর্সেনিক দূরীকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, তার অনেক ক্ষেত্রেই যন্ত্র বসিয়ে দায় সেরেছেন কর্তৃপক্ষ। নিয়মিত পরিদর্শন হয়নি প্রকল্পগুলির। ফলে সেগুলি আর আর্সেনিককে দূরে রাখতে পারছে কি না কিংবা যন্ত্রের কর্মক্ষমতা চলে গিয়েছে কি না, তা দেখা প্রয়োজন মনে করেনি কেউ। সে-সব ক্ষেত্রে প্রকল্পগুলি এখন আর আর্সেনিক দূর করতে পারছে না। কিন্তু মানুষ আর্সেনিকমুক্ত জল মনে করে তা নিশ্চিন্তে পান করছেন।

আর্সেনিক দূরীকরণ প্রযুক্তি কাজ না-করার আরও একটি কারণ খুঁজে পেয়েছে কেন্দ্রীয় ভূ-জল পর্ষদ। রুরকি আইআইটি-র সঙ্গে যৌথ সমীক্ষায় তারা দেখেছে, ভুল প্রযুক্তি ব্যবহার করায় প্রথম থেকেই ওই আর্সেনিক দূরীকরণ যন্ত্র পানীয় জল থেকে যথেষ্ট মাত্রায় আর্সেনিক দূর করতে পারেনি। দিনে দিনে ওই সব যন্ত্রের কর্মক্ষমতা কমেছে। ফলে ওই সব যন্ত্রে আর আর্সেনিক দূর করা যাচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন