গরু বিলি করার খোঁজ নিচ্ছে সিআইডি-ও

সোমবার বিকেলে জেলা সিআইডি-র তিন সদস্যের দল গিয়েছিল তমলুকের খারুই এলাকায়। যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে এই ‘গো-মাতা শিবির’ হচ্ছে, সেই ‘ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় স্মৃতি যুব সঙ্ঘ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’-র কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিআইডি কর্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪৬
Share:

গো-ধন: শিবিরে গরু বিলির পরে তুলে রাখা হচ্ছে ছবি। —নিজস্ব চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছিল আগেই। এ বার পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক ও কোলাঘাটের গ্রামে গ্রামে নিখরচায় গরু বিলি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করল সিআইডি। রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, এখনই তারা ঘটনার তদন্ত (ইনভেস্টিগেশন) করছে না। তবে বিস্তারিত খোঁজ (এনকোয়্যারি) নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

সোমবার বিকেলে জেলা সিআইডি-র তিন সদস্যের দল গিয়েছিল তমলুকের খারুই এলাকায়। যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে এই ‘গো-মাতা শিবির’ হচ্ছে, সেই ‘ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় স্মৃতি যুব সঙ্ঘ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’-র কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিআইডি কর্তারা। সংস্থাটি সরকারিভাবে নথিভুক্ত কিনা, নিখরচায় বিলির জন্য গরু কোথা থেকে আনা হচ্ছে, এর জন্য টাকা কোথা থেকে আসছে— সবই জানতে চান তদন্তকারীরা। সংস্থাটি আর কী কী কাজের সঙ্গে যুক্ত, তা-ও জানতে চাওয়া হয়। সিআইডি-র দল পরে কোলাঘাটের খন্যাডিহিতেও গিয়েছিল। যাঁরা গরু পেয়েছেন, তাঁদের বাড়ি গিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা।

তমলুক ও কোলাঘাটের বিভিন্ন গ্রামে নিখরচায় গরু বিলি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে হলেও এর সঙ্গে জড়িত সকলেই এলাকায় বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত। গরু বিলির শিবিরে টাঙানো ব্যানারে শ্যামাপ্রসাদ, নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের ছবিও থাকছে। ফলে, শোরগোল পড়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, গরু নিয়ে রাজনীতি করতে এ সব করাচ্ছে বিজেপি। বিষয়টি জানতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে খোঁজ নিতে বলেছিলেন। আর তারপরই পুলিশ ও সিআইডি-র এই তৎপরতা।

Advertisement

বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য এর সঙ্গে দলীয় যোগ মানতে নারাজ। এ দিন সিআইডি কর্তাদের প্রশ্নের জবাবে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার লোকজনও জানান, গ্রামবাসী যাতে গরু পালন করে স্বনির্ভর হতে পারেন, সে জন্যই এই উদ্যোগ। এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। পরে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘সিআইডি’র দল আমাদের কাছে এসেছিল। আমাদের সংস্থা এবং গরু বিলির বিষয়ে ওঁরা যা যা জানতে চেয়েছেন, সবই বলেছি। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’’

জেলা পুলিশ ও সিআইডি সূত্রে খবর, ওই স্বেচ্ছাসবী সংস্থার বিরুদ্ধে এখনও মামলা দায়ের হয়নি। তবে গরু বিলি নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারকে রিপোর্ট দেওয়া হবে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘গরু বিলির ব্যাপারে প্রাথমিক তদন্ত চালানো হচ্ছে। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিষয়েও বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর মন্তব্য, ‘‘বিষয়টি পুলিশই দেখছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন