অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষের বিবৃতি বলে হোয়াটসঅ্যাপে যা ছড়িয়ে পড়ছে, তা নিয়ে এ বার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করল সিআইডি। ভবানী ভবন সূত্রের খবর, লালবাজারের সাইবার থানায় তারা অভিযোগ জানিয়েছে। অভিযোগপত্রের মূল কথা, ওই কণ্ঠস্বর আদৌ ভারতীর কি না, তা তদন্ত করে দেখা হোক।
ওই সব বিবৃতিতে অভিযোগ তোলা হয়েছে মূলত সিআইডি-র বিরুদ্ধেই। তাই নিরপেক্ষতার জন্য কলকাতা পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে গোয়েন্দারা জানান। তবে লালবাজার সূত্রে অবশ্য রাত পর্যন্ত এমন কোনও অভিযোগ দায়ের করার কথা স্বীকার করা হয়নি।
পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানায় নোটবন্দির সময়ে সোনা কেনার নামে প্রতারণার মামলা রুজু হয়েছে। তাতে এক স্বর্ণব্যবসায়ী এবং ভারতী ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত একাধিক পুলিশ অফিসার গ্রেফতার হয়েছেন। পরোয়ানা জারি হয়েছে ভারতী এবং তাঁর দেহরক্ষী সুজিত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। সেই তদন্তে ভারতীর নাকতলার বাড়ি, মাদুরদহের আবাসন এবং তাঁর ঘনিষ্ঠের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে গয়না, নগদ টাকা এবং নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ঘটনার সময়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ছিলের ভারতী। খড়্গপুর লোকাল থানায় তাঁর বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ করার মামলা রুজু করেছেন এক ব্যবসায়ী।
আরও পড়ুন: ভারতী মামলায় গোপন জবানবন্দি
পুলিশি সূত্রের খবর, ভারতী দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যের বাইরে আছেন। তল্লাশির পর থেকেই তাঁর নাম করে ক্রমাগত অডিও-বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। তাতে তদন্তের নামে ভারতীর স্বামী এমএভি রাজুকে হেনস্থা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে শাসক দলের হয়ে সিআইডি-র কাজ করা, মিথ্যে মামলা সাজানোর মতো অভিযোগ করা হয়েছে। সেই সব অভিযোগে রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগ এবং প্রশাসনকে কালিমালিপ্ত করা হয়েছে বলে মনে করছেন সিআইডি-কর্তারা। তাই এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা জরুরি বলে মনে করছেন তাঁরা। সিআইডি-র এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই অডিও টেপ যে ভারতীদেবীরই, তা নিশ্চিত ভাবে বলা আইনত যুক্তিযুক্ত নয়। তাই কে এই ধরনের কথা বলছেন, কারা তা ছড়াচ্ছেন— সবই তদন্ত করে দেখা দরকার।’’
ভারতীর আইনজীবী পিনাকী ভট্টাচার্যের বক্তব্য, এই ধরনের মামলা করে তাঁর মক্কেলকে চাপে ফেলার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ‘‘সারদা মামলার সময়েও এ ভাবে মামলার জালে ফাঁসিয়ে এক অভিযুক্তের কণ্ঠ রোধ করা হয়েছিল। এ বারেও করা হচ্ছে,’’ বলেন পিনাকীবাবু।