দ্বন্দ্ব মেটাল দল-শোভন

এ দিন মমতার সঙ্গে শোভনের ঠিক কী কথা হয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে দলীয় সূত্রের খবর, তিনটি দফতরের মন্ত্রী ও মেয়র হিসেবে তাঁর কাঁধে যে গুরুভার দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোনও শিথিলতা চলবে না— এই বার্তাই দেওয়া হয়েছে শোভনকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৮ ০৩:৫৯
Share:

শোভন চট্টোপাধ্যায়

মেয়র থাকছেন। মন্ত্রিত্বও যাচ্ছে না। এ ভাবেই ইতি পড়ল তৃণমূলে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনার। সোমবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শোভনের টেলিফোনে কথা হয়। ইদানীং তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর যোগাযোগ কমে গিয়েছিল।

Advertisement

এ দিন মমতার সঙ্গে শোভনের ঠিক কী কথা হয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে দলীয় সূত্রের খবর, তিনটি দফতরের মন্ত্রী ও মেয়র হিসেবে তাঁর কাঁধে যে গুরুভার দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোনও শিথিলতা চলবে না— এই বার্তাই দেওয়া হয়েছে শোভনকে। পাশাপাশি, এটাও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, ব্যক্তিগত কোনও বিষয় যেন তাঁর প্রশাসনিক কাজ ও দায়বদ্ধতায় ছায়া না ফেলে।

সোমবার সন্ধ্যায় শোভন বলেন, ‘‘মেয়র ছিলাম। আছিও। মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলাম। আজও আছি।’’ দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘শোভন দলের অন্যতম কান্ডারি। তিনি দল ছাড়তে চাননি। দলও তাঁকে ছেড়ে দিতে বলেনি।’’ সাম্প্রতিক বিতর্ককে শোভন ও পার্থ দু’জনেই ‘সংবাদ মাধ্যমের অপপ্রচার’ বলে উড়িয়ে দেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: ঘরনির ভয়ে পুলিশ-শরণে মহানাগরিক

স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করার পরে কলকাতার এক কলেজ শিক্ষিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রকাশ্যে শোভনের ‘ব্যক্তিগত’ ঘনিষ্ঠতা দলকে বিড়ম্বনায় ফেলছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি শাশুড়ি, তৃণমূল বিধায়ক কস্তুরী দাসের মৃত্যুর পরেও শোভন সেখানে না যাওয়ায় বিষয়টি বড় মাত্রা পায়।

ইতিমধ্যে শোভনের নিরাপত্তা জেড প্লাস থেকে কমিয়ে জেড করে দেয় সরকার। জটিলতা আরও জমাট বাঁধে দিন কয়েক আগে নজরুল মঞ্চে দলের কোর কমিটির বৈঠকে তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে। দলীয় সূত্রে অনুপস্থিতির কারণ ‘অসুস্থতা বলা হলেও সেই দিনই শহরের অন্যত্র দেখা যায় শোভনকে। ঘটনাচক্রে তার আগের দিনই তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, যার এক জন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বৈশাখী। সব মিলিয়ে এ ভাবেই বাড়ছিল জল্পনার পারদ।

অবশেষে সোমবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন মেয়র। শোভন তখন কলকাতায় ছিলেন না। পরে মেয়র এই প্রথম নিজের মুখে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন। তৃণমূলের অন্দরে অনেকেরই ধারণা শোভনকে দলনেত্রী কিছু ‘উপদেশ’ দিয়েছেন, সতর্কও করেছেন। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘শোভন তৃণমূলের অতি বিশ্বস্ত ও পুরনো কর্মী। দল তাঁকে মর্যাদা দিয়েছে। কিন্তু তিনিও নিশ্চয় বুঝবেন দায়িত্বশীল পদে যাঁরা থাকেন, শুধু নিজের ভাবমূর্তি নয়, দলের ভাবমূর্তি রক্ষাও তাঁদের কর্তব্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন