সন্ময়-কাণ্ডে রাস্তায় নাগরিক সমাজ

সকলেরই বক্তব্যের নির্যাস— সন্ময়বাবুর উপরে আক্রমণ কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৫৩
Share:

সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে এগিয়ে এলেন অম্বিকেশ মহাপাত্র-সহ অনেকেই। —নিজস্ব চিত্র।

প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার এবং তাঁর উপরে পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে রাস্তায় নামল রাজ্যের নাগরিক সমাজ।

Advertisement

অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস লাগোয়া রাণুছায়া মঞ্চে মঙ্গলবার প্রতিবাদ-সভায় সামিল হলেন মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, শিক্ষা জগতের পবিত্র সরকার, সুদিন চট্টোপাধ্যায়, অলোক বন্দ্যোপাধ্যায়, রঞ্জুগোপাল মুখোপাধ্যায় এবং সন্ময়বাবুর দাদা তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকেই।

‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’ আয়োজিত ওই সভায় ছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীও। সকলেরই বক্তব্যের নির্যাস— সন্ময়বাবুর উপরে আক্রমণ কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। শিলাদিত্য চৌধুরী, অম্বিকেশ মহাপাত্র, তানিয়া ভরদ্বাজকে দিয়ে সংবিধান স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকারের উপরে যে আক্রমণ শুরু হয়েছে, সন্ময়-কাণ্ড তারই ধারাবাহিকতা। এর বিরুদ্ধে সমাজের সব স্তরের মানুষের প্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রয়োজন। ওই সভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হবে, সংবিধানের কোন ধারায় সন্ময়বাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল?

Advertisement

মঙ্গলবার প্রতিবাদ-সভায় বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। —নিজস্ব চিত্র।

অম্বিকেশবাবু, অভিনেতা দেবদূত ঘোষ, বিমল চক্রবর্তী প্রমুখ এ দিন ‘আক্রান্ত আমরা’র তরফে সন্ময়বাবুর বাড়ি গিয়ে তাঁর পরিজনেদের লড়াইয়ের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। অম্বিকেশবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা লিখিত প্রতিবাদ জানাবেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যপালের কাছে। প্রতিবাদ-সভায় মান্নান অভিযোগ করেন, এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল গণতন্ত্র হরণ এবং সাম্প্রদায়িকতা— দুই বিষয়েই কেন্দ্রের শাসক বিজেপির ‘বি টিম’। যে ভাবে সন্ময়বাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাকে ‘অপহরণ’ আখ্যা দিয়ে সুজনবাবু বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে বাউন্সারের রাজত্ব চলছে বলে মনে হচ্ছে!’’ অশোকবাবু বলেন, ‘‘মানবাধিকার কমিশন-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই অত্যাচারের সামনে চুপ, নতজানু। সন্ময়বাবুর উপরে অত্যাচারের বিবরণ আদালতে পেশ করে ক্ষতিপূরণের মামলা করা যায়। করা উচিত।’’

প্রতিবাদে মুখর হলেন মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ও। —নিজস্ব চিত্র।

সন্ময়বাবুর প্রতি বিকাশবাবুর আহ্বান— তিনি যেন নির্যাতনের গ্লানি ঝেড়ে ফেলে অবিলম্বে ফের তাঁর শক্তিশালী কলম তুলে নেন। তন্ময়বাবু তাঁর ভাইয়ের উপরে জুলুমের বিবরণ দিয়ে আইনি সহায়তা এবং নিরাপত্তার পরামর্শের জন্য আবেদন করেন বিদ্বজ্জনেদের কাছে। সমাজের যে অংশ এখনও নির্লিপ্ত, প্রতিবাদের স্বর তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আবেদন জানান শিক্ষা জগতের প্রতিনিধিরা। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক অধিকার সংবিধান স্বীকৃত। কিন্তু কেউ যদি তার অপব্যবহার করেন, সেটা সংবিধান স্বীকৃত নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন