ধূপগুড়িতে বিক্ষোভকারীদের পাথরে জখম জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেন্ডুপ শেরপা। শুক্রবার ঝিনাইডাঙায় বিজেপির সভায়
দুপুর থেকে সন্ধ্যা, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায় দুই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠল বিজেপির সমর্থকদের দিকে। দুপুরে জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি থেকে বিজেপি কর্মীদের বাস পুলিশ আটকে দেয় বলে অভিযোগ। পাল্টা অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরা তখন বাস থেকে নেমে পুলিশের উপরেই চড়াও হন। তাঁদের ছোড়া পাথরে এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার-সহ ১২ জন পুলিশ কর্মী জখম হন। এনবিএসটিসি-র একটি বাসেও ভাঙচুর করা হয়। তাতে জখম হন কয়েক জন যাত্রী। রাতে ঝিনাইডাঙার সভাস্থল থেকে ফেরার পথে মাথাভাঙার আঙারপোতা-পারডুবি অঞ্চলে তৃণমূলের একটি শান্তি মিছিলে বিজেপি সমর্থক বোঝাই একটি গাড়ি ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ। সেই গাড়ির ধাক্কায় এক তৃণমূল কর্মী প্রাণ হারান।
ধূপগুড়ির ঘটনায় জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) থেন্ডুপ শেরপার ডান চোখে আঘাত লাগে। তাঁকে শিলিগুড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। একটি নার্সিংহোমে তাঁর চোখে অস্ত্রোপচারও হয়। পাথরের ঘায়ে জখম ধূপগুড়ি থানার আইসি সুবীর সরকারও। এএসআই তপন দাস মার থেকে বাঁচতে রাস্তার পাশে একটি বাড়িতে ঢুকে পড়েন বলে দাবি করেছেন। তিনি জানান, ওই বাড়ির মালিকের সাহায্যে তাঁর ঘরেই আধ ঘণ্টা লুকিয়ে থাকতে হয়। পুলিশকে বাঁশপেটা করার অভিযোগও উঠেছে।
বিজেপির অভিযোগ, তাঁদের ২৪টি বাস যাচ্ছিল কোচবিহার এবং কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ারের সাহায্যে সেগুলিকে আটকান পুলিশ আধিকারিকেরা। সিভিক ভলান্টিয়ারদের অভব্য আচরণে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বিজেপি কর্মীরা। পুলিশ সূত্রে বলা হচ্ছে, মাত্র ৩০ জন মিলে বাস আটকাতে যাওয়া হয়েছিল। সঙ্গে হেলমেট বা বেতের ঢাল, কিছুই ছিল না। এমনকি, উত্তেজিত বিজেপি কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়লে তা ফাটেনি। ঘটনার পরই ধূপগুড়ি থানায় আসেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি। তিনি বলেন, “পুলিশের ওপর আক্রমণের ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের মোটামুটি চিহ্নিত করা হয়েছে। কাউকেই রেয়াত করা হবে না।’’ পুলিশ জানিয়েছে, চার বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারায় খুনের চেষ্টার মামলাও করা হয়েছে। বিজেপির উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির পর্যবেক্ষক দীপেন প্রামাণিক বলেন, ‘‘সকাল থেকেই বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ আমাদের গাড়ি আটকাচ্ছিল। ধূপগুড়িতে পুলিশই এ দিন আামাদের কর্মীদের মেরেছে।’’
এ দিনই রাতে সভাস্থল থেকে ফেরার সময়ে মাথাভাঙায় বিজেপির গাড়ির ধাক্কায় যোগেশ বর্মণ (৬০) নামে এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি অশোক বর্মণ বলেন, ‘‘আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বিজেপি সমর্থকদের একটি গাড়ি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হামলা চালায়।’’ তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক মনোজ ঘোষ বলেন, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। কিন্তু তৃণমূল সবেতেই বিজেপির ভূত দেখছে।’’
ছবি:অর্ণব সাহা ও হিমাংশুরঞ্জন দেব