পশ্চিম মেদিনীপুরে পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়তে থাকায় চিন্তিত খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্ঘটনায় রাশ টানতে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। প্রশাসন সূত্রে খবর, সোমবার খড়্গপুরে প্রশাসনিক বৈঠকের শেষে দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের দিকে তাকিয়ে মমতা বলেন, “জেলায় পথ দুর্ঘটনা কেন বাড়ছে? এটা পুলিশকে দেখতে হবে।” তাঁর সংযোজন, “এ বার ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ সপ্তাহ জেলায় ভাল ভাবে পালন করতে হবে।”
পুলিশের এক সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে পথ নিরাপত্তা নিয়ে মানুষকে আরও সচেতন করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সচেতনতা প্রচারে মেদিনীপুরের সব স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে এক কর্মসূচির পরিকল্পনা রয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছিলেন, “দুর্ঘটনা নিয়ে কথা বলার সময় মুখ্যমন্ত্রীর হাতে যাবতীয় তথ্য-পরিসংখ্যান ছিল। ফলে, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বেগের কারণ নস্যাৎ করার জায়গা ছিল না।” পশ্চিম মেদিনীপুরে যে পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে তা পরিসংখ্যানেও স্পষ্ট। জেলা পুলিশের ওই কর্তার কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী সব জেলার খবর রাখেন। আমাদের জেলার সব খবরও তাঁর কাছে ছিল।”
কিন্তু কেন দুর্ঘটনা বাড়ছে?
পুলিশের এক সূত্রের সাফাই, এখন গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে। উঠতি যুবকেরাও বাইক চালাচ্ছেন। অনেকের মাথায় হেলমেট থাকছে না। ফলে, দুর্ঘটনা বাড়ছে। মৃত্যুও হচ্ছে। ওই সূত্রের মতে, দিন কয়েক আগেই মেদিনীপুরের কাছে দুর্ঘটনায় দুই তরুণ মারা গিয়েছে। মাথায় হেলমেট থাকলে ওঁদের কেউই মারা যেতেন না। জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষেরও বক্তব্য, “ভাল ভাবে বাঁচতে গেলে মাথায় হেলমেট পরে গাড়ি চালাতে হবে। নিজেদের ভালর জন্যই গাড়ি চালানোর সময় হেলমেট পরা উচিত। এটা সকলকে বুঝতে হবে।”
আরও পড়ুন: বিপদ ঘণ্টা শুনেও ‘বধির’
জেলায় হেলমেটহীন মোটরবাইক চালক ও আরোহীদের দাপাদাপি নতুন নয়। অনেকেই বেপরোয়া ভাবে বাইক চালান। পুলিশের দাবি, প্রচার- কড়া নজরদারি থেকে জরিমানা আদায়, মাথায় হেলমেট পরাতে চেষ্টার খামতি নেই। অবশ্য এত সবের পরেও যে বাইক-যাত্রায় আমূল বদল আসেনি, সেই কথা ঠারেঠোরে কবুল করছে পুলিশের একাংশই। পরিস্থিতি দেখে এখন কাউন্সেলিংয়ে জোর দিয়েছে পুলিশ। হেলমেটহীন বাইক চালকদের বেশ কয়েকটি পথ দুর্ঘটনার কথা শোনানো হচ্ছে। খুঁটিয়ে বোঝানো হচ্ছে, হেলমেট মাথায় ছিল বলে কারা বেঁচে গিয়েছেন। যাঁরা হেলমেট পরেননি, তাঁরা কী ভাবে মারা গিয়েছেন। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, “এই কাউন্সেলিংয়ে কাজ দিচ্ছে। হেলমেট পরাটা অভ্যাসের ব্যাপার। অভ্যাস গড়ে তুলতে এমন সচেতনতা- প্রচার খুব জরুরি।”