নজরে ঝাড়গ্রামও, বোঝালেন মমতা

মুখ্যমন্ত্রীর উষ্মার জেরে বারবার উঠে দাঁড়িয়ে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করলেন জেলাশাসক আয়েষা রানি। কিন্তু চুম্বকে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন ঝাড়গ্রাম জেলার কাজকর্ম নিয়ে তিনি মোটেই সন্তুষ্ট নন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডেবরা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:১১
Share:

ডেবরায় মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

বৈঠক হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরের। তবে সেখানে হাজির ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরাও। বুধবার ডেবরার সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার বুঝিয়ে দিলেন, জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রাম তাঁর বিশেষ নজরে রয়েছে।

Advertisement

সরকারি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে রোগী ‘রেফার’ হোক কিংবা ঝাড়গ্রাম ব্লকের প্রত্যন্ত মেউদিপুর-ভিড়িংপুর রাস্তা নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ, অরণ্যশহরের উড়ালপুলের তলায় দু’পাশে সার্ভিস রোড না-হওয়ার মতো অজস্র অভিযোগের উল্লেখ করে এ দিন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের গড়িমসিকেই দুষেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মানুষের কাজ ফেলে রাখার জন্য লালগড়ের বিডিওকে দাঁড় করিয়ে ধমক দিয়েছেন। জেলার ভূমি দফতরের ব্লক আধিকারিকদের দফতরে দুর্নীতি ঠেকাতে উদ্যোগ নিতে বলেছেন। কয়েকটি ব্লকের বিএলআরও-দের দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চেয়েছে‌ন, ‘‘আপনাদের বিরুদ্ধে বালি খাদান নিয়ে এত অভিযোগ কেন হচ্ছে?’’

মুখ্যমন্ত্রীর উষ্মার জেরে বারবার উঠে দাঁড়িয়ে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করলেন জেলাশাসক আয়েষা রানি। কিন্তু চুম্বকে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন ঝাড়গ্রাম জেলার কাজকর্ম নিয়ে তিনি মোটেই সন্তুষ্ট নন। জেলাপরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাসকে আরও চটপটে হওয়ার নির্দেশ দিলেন মমতা।

Advertisement

এ দিন দুই জেলার প্রশাসনিক বৈঠকের অনেকখানি জুড়ে থাকল ঝাড়গ্রাম জেলা। প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের জেলা আধিকারিকরা ‘আপ-টু-ডেট’ রিপোর্ট নিয়ে তৈরি থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী নিজের সংগ্রহ করা মানুষের অভিযোগের তথ্য নিয়ে কৈফিয়ৎ চাইলেন।

জঙ্গলমহলের এই জেলায় ধাক্কাটা এসেছিল গত পঞ্চায়ত ভোটে। তারপর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হাতে চলে যায় ঝাড়গ্রাম লোকসভা। আমজনতাকে পরিষেবা দানের ক্ষেত্রে যে প্রশাসনের অন্দরেই খামতি রয়েছে তা এদিন বারবার বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

কিছুদিন আগে গোপীবল্লভপুর ও ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে রেফার করে দেওয়া হয়েছিল আসন্ন প্রসবা এক তরুণীকে। নার্সিংহোমে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। এ দিন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝিকে দাঁড় করিয়ে মমতা জানতে চান, এত রেফার কেন হচ্ছে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর ধমক, ‘‘সবাইকে যদি রেফার করে দেন, তাহলে মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি তৈরি হয়েছে কী জন্য? ’’ বিষয়টি দেখবেন জানিয়ে বসে পড়েন অপ্রস্তুত সিএমওএইচ। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঝাড়গ্রাম থেকে সব থেকে বেশি অভিযোগ এসেছে তাঁর দফতরে। পুলিশের বিরুদ্ধে ২৬টি অভিযোগ আছে জানিয়ে সতর্ক করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। ঝাড়গ্রাম থানা ও গোপীবল্লভপুর থানার আইসি-র কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না বলে ডিজিকে পদক্ষেপও করতে বলেন। লালগড়ের বিডিওকে দাঁড় করিয়ে আদিবাসী শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে গড়িমসি নিয়ে ধমক দেন মুখ্যমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন