সেই বকুনি সমানে চলছে

কখনও কুশমণ্ডিতে নির্যাতিতার ২০-২২ ঘণ্টা পড়ে থাকা, কখনও সেই ঘটনায় থানাগুলোর মধ্যে ঠেলাঠেলি, তো কখনও রায়গঞ্জে ছাত্রমৃত্যুর পরে পুলিশের উপরে জনগণের ক্ষোভের বিস্ফোরণ। সব ক’টি ঘটনাই এ দিন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:৫১
Share:

গঙ্গারামপুর স্টেডিয়ামের সভায় মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: অমিত মোহান্ত।

তিনি মুখ্যমন্ত্রী। তিনিই পুলিশমন্ত্রী। তাই পুলিশের ভুলচুকের দায়দায়িত্ব তাঁর উপরেও এসে পড়ে। সম্প্রতি উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে, মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদে বা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে যে ধরনের ধাক্কা খেতে হয়েছে পুলিশকে, তাতে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশাসন উদ্বিগ্ন। সেই উৎকণ্ঠা ক্ষোভ হয়ে আছড়ে পড়ল বুধবার রায়গঞ্জের সভায়। পুলিশ থেকে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তি, সকলকে কঠোর ভাষায় ভর্ৎসনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে কৃষ্ণনগরের প্রশাসনিক সভাতেও পুলিশকে বকুনি দিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

কখনও কুশমণ্ডিতে নির্যাতিতার ২০-২২ ঘণ্টা পড়ে থাকা, কখনও সেই ঘটনায় থানাগুলোর মধ্যে ঠেলাঠেলি, তো কখনও রায়গঞ্জে ছাত্রমৃত্যুর পরে পুলিশের উপরে জনগণের ক্ষোভের বিস্ফোরণ। সব ক’টি ঘটনাই এ দিন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ‘‘কোনও ঘটনা ঘটবে, তার ৬ ঘণ্টা পর বা পরের দিন পুলিশ বাড়ি থেকে বার হয়ে ব্যবস্থা নেবে! ভাঙচুর হবে, আগুন লাগানো হবে। পুলিশকে সঙ্গে সঙ্গে ‘অ্যাকশন’ নিতে হবে। ইন্টেলিজেন্স কোনও খবরই পায় না! এগুলো চলতে থাকলে বিডিও, আইসি, ডিএম, এসপি-দের থেকে লাভ নেই।’’

ভরা প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘এসপি, বিডিও যে-ই হোন, কোনও ঘটনাকে ছোট করে দেখবেন না।’’ বলেন, ‘‘একটি আদিবাসী মেয়ে নির্যাতিত হয়ে ২০-২৪ ঘণ্টা পড়ে রইল, তোমরা জানতে পারলে না! পুলিশ কি এলাকায় টহল দেয় না? সোর্স নেই? এত সিভিক পুলিশ কী করে? সবাই এত ‘ইনঅ্যাকটিভ’ (নিষ্ক্রিয়) কেন?’’

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর এই ভর্ৎসনা শুনে বিরোধীদের একাংশ বলছে, গোয়েন্দা ব্যর্থতার পরিমাণ তো কম নয়। রায়গঞ্জ, কুশমণ্ডি, দৌলতাবাদ তো বটেই, ভাঙড় বা গত বছর পাহাড়ের সিংমারির গোলমালের সময়েও তার প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু শুধু ধমক দিলেই কি পরিস্থিতি বদলাবে? রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘পুলিশের পরিকাঠামো কোথায় কতটা বেহাল, তা নিয়ে ভাবতে হবে মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রীকে।’’ বিজেপির উত্তর দিনাজপুরের জেলা সভাপতি নির্মল দামের মতে, এ ভাবে ক্ষোভ প্রকাশে দু-চার জন সতর্ক হলেও বাকিদের উপরে প্রভাব পড়ে না। তৃণমূলের একাংশ মনে করছে, মানুষের মধ্যে পুলিশ-প্রশাসন সম্পর্কে যে ক্ষোভ জমেছে, তা বুঝেই ধমক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ কিছুটা প্রশমিত হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন