নেহরু-রাহুলদের গুণ গেয়েই মমতার নবান্নে ফারুক

জওহরলাল নেহরু তাঁর বাবাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছিলেন। তাই বলে কি তিনি কখনও বলতে পারবেন যে, দেশের জন্য নেহরুর কোনও অবদান ছিল না?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৪৪
Share:

আলোচনা: নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ফারুক আবদুল্লা। শুক্রবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

জওহরলাল নেহরু তাঁর বাবাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছিলেন। তাই বলে কি তিনি কখনও বলতে পারবেন যে, দেশের জন্য নেহরুর কোনও অবদান ছিল না? ইন্দিরা গাঁধীর সঙ্গে প্রথমে তাঁর হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তিনিই আবার তাঁর সরকারকে বরখাস্ত করেছিলেন! তাই বলে কি তিনি বলবেন যে, দেশের জন্য ‘লৌহমানবী’র কোনও অবদান নেই? রাজীব গাঁধী পেশায় পাইলট ছিলেন। অল্প দিনেই তিনি যে এ দেশের প্রযুক্তিগত ব্যবস্থায় বিপ্লব এনেছিলেন, অস্বীকার করা যাবে? প্রশ্ন তুলছেন ফারুক আবদুল্লা। জম্মু ও কাশ্মীরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নিশানায় অবশ্যই বিজেপি!

Advertisement

বিভাজনের নিত্যনতুন কৌশল আমদানি করে এ দেশের রাজনীতিতে সৌজন্য এবং পরম্পরার অপমৃত্যু ঘটানো হচ্ছে বলে সরব হয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের এই প্রবীণ সাংসদ। কলকাতায় এসে শুক্রবার রাজনৈতিক সংস্কৃতি ধ্বংস নিয়ে আক্ষেপ করার পাশাপাশিই অল্প সময়ের জন্যও নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ সেরে গিয়েছেন তিনি।

কলকাতায় বণিকসভা ভারত চেম্বার অফ কমার্সের আয়োজনে একটি কথোপকথনের আসরে শুক্রবার ফারুক অভিযোগ করেছেন, মানুষের হৃদয় জয় করার কোনও চেষ্টা না করে নরেন্দ্র মোদীর রাজত্বে শুধুই বিভাজন ঘটানো হচ্ছে। কাশ্মীরের পরিস্থিতিরও সেই কারণে অবনতি হয়েছে বলে তাঁর মত। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীকে বিজেপি নেতারা যে ভাবে ‘পাপ্পু’ বলে কটাক্ষ করতেন, তারও কড়া সমালোচনা করেছেন ফারুক। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে নেহরু, ইন্দিরা, রাজীবদের দৃষ্টান্ত দিয়ে তাঁর অভিযোগ, বিজেপি নেতারা ইতিহাস এবং পরম্পরাকে অস্বীকারের মানসিকতা নিয়ে চলছেন। ফারুকের মন্তব্য, ‘‘রাহুল এখন আর পাপ্পু নন। উনি রাহুল গাঁধী! যারা কটাক্ষ করেছিল, তারাও বুঝতে পারছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: রাজ্যের হয়ে সওয়াল, দলের ক্ষোভে সিঙ্ঘভি

বণিকসভার অনুষ্ঠানের পরে নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে একান্তে বেশ কিছু ক্ষণ কথা বলেন বর্ষীয়ান কাশ্মীরি নেতা। নবান্নের গেটের সামনে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে এসে তাঁকে গাড়িতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রশ্নের উত্তরে ফারুক বলেন, ‘‘দেশের পরিস্থিতি খুব খারাপ। দেশকে বাঁচাতে হবে। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে যে নজরদারির ব্যবস্থা হচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।’’ ফারুকের ডান চোখ টকটকে লাল হয়ে ছিল! মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওঁর চোখে হঠাৎ একটা সমস্যা হয়েছে। তাই এখানে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন