Mamata Banerjee

বিডিও কথা শোনেন না! দলীয় বিধায়ক বিমলেন্দুর অভিযোগ শুনে প্রকাশ্যে ধমক মমতার

সরাসরি না বললেও, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সর্বসমক্ষে এলাকার ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও)-কে ঘুরিয়ে বদলি করানোর আবেদন করেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক। তার বদলে জুটল ধমক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২২ ১৬:০৮
Share:

তৃণমূল বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়কে ধমক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। — নিজস্ব চিত্র।

বিডিও বিধায়কের কথা শুনছেন না। প্রশাসনিক সভায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এমন অভিযোগ করলেন খোদ বিধায়কই। একই সঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, বিডিওর অনেক দিন হয়ে গিয়েছে একই জায়গায়। এর পরের বাক্যেই বিধায়ক বিডিওকে সরিয়ে দেওয়ার আর্জিও জানান ইঙ্গিতে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সে ‘প্রস্তাব’ সরাসরি নাকচ করে নিজের দলের বিধায়ককে প্রকাশ্যেই ধমকালেন। জানিয়ে দিলেন, বিধায়কের কথা শোনাটা বিডিওর কাজের মধ্যে পড়ে না। ঘটনাচক্রে করিমপুরের ওই বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়কে কয়েক দিন আগেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রানাঘাটে চলছিল মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক। সেই বৈঠকে বলার সুযোগ পেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে করিমপুর-১ ব্লকের বিডিও অনুপম চক্রবর্তীকে নিয়ে অভিযোগ করেন বিমলেন্দু। নিজের এলাকার পরিস্থিতির কথা জানাতে গিয়ে করিমপুরের বিধায়ক বলেন, ‘‘করিমপুরের সব কিছু ঠিকঠাক আছে। তবে আপনার কাছে একটা আবেদন, আমাদের করিমপুর-১-এর যিনি বিডিও আছেন তিনি আমার কথা ঠিকমতো শোনেন না। আমি মনে করি, তিনি একটা দল তৈরি করছেন। ওটা যদি একটু দেখেন। আর উনি অনেক দিন আছেন। ওঁর সময়ও হয়ে গিয়েছে।’’

বিমলেন্দু যখন এক সরকারি আধিকারিককে নিয়ে এ হেন মন্তব্য করছেন তখন প্রশাসনিক বৈঠক মধ্য পর্বে। এই আবহে করিমপুরের বিধায়কের কথা শুনে মমতা শান্ত স্বরেই বলেন, ‘‘না, এটা এমন ভাবে বলা যায় না। বিধায়কের কাজ নয় বিডিওকে বদলি করা।’’ মমতার বক্তব্য শেষ হতে না হতেই বিমলেন্দু পাল্টা বলেন, ‘‘ম্যাডাম, আমি শুধু আপনার কাছে বলছি আর কী।’’

Advertisement

বিমলেন্দুর ব্যাখ্যা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। স্থান-কাল-পাত্রের বিচারে এমন মন্তব্য করা যায় কি না সেই প্রশ্ন তুলে তিনি ধমক দেওয়ার সুরে বলেন, ‘‘এখানে হাজার জন লোক আছে। আপনি কাকে বলছেন? বসুন।’’ এর পর বিধায়ককে তিনি পরামর্শ দেন, ‘‘বিডিও আপনার কথা শুনে চলবে তার কোনও মানে নেই। বিডিওকে আপনাকেও সহযোগিতা করতে হবে।’’ এর পর অবশ্য কথা বাড়াননি বিমলেন্দু।

গত সেপ্টেম্বরেই করিমপুরের তৃণমূল বিধায়ক বিমলেন্দুর বিরুদ্ধে দলীয় পদ দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তোলেন হাসান আলি মণ্ডল নামে এক প্রাক্তন সেনাকর্মী। সেই বিষয়টি এখন হাই কোর্টের বিচারাধীন। এই পর্বেই নতুন মাত্রা যোগ হয় অতি সম্প্রতি যখন নদিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বিমলেন্দুকে। যে খবর সমাজমাধ্যমে পেয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিমলেন্দু। বৃহস্পতিবারের প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ হল নতুন মাত্রা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন