জিএসটি বৈঠকে যেতে অমিত মিত্রকে নিষেধ মুখ্যমন্ত্রীর

এ বার ‘না’ অমিত মিত্রকে। শ্রীনগরে জিএসটি পরিষদের আসন্ন বৈঠকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিতবাবুকে যেতে নিষেধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৭ ০৪:০৩
Share:

এ বার ‘না’ অমিত মিত্রকে। শ্রীনগরে জিএসটি পরিষদের আসন্ন বৈঠকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিতবাবুকে যেতে নিষেধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের মাঝে মুখ্যমন্ত্রী জানান, অমিতবাবুর যা শারীরিক অবস্থা তাতে শ্রীনগরে গেলে আবার অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তাই তাঁর না যাওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ, নরেন্দ্র মোদী-বিরোধী রাজনীতির অস্ত্রে শান দিতেই জিএসটি পরিষদের বৈঠকে অর্থমন্ত্রীকে পাঠাচ্ছেন না মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠক এবং মাওবাদী দমনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ডাকা মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে মমতা নিজেই যাননি। নীতি আয়োগের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে অমিতবাবু গেলেও তাঁকে রাষ্ট্রপতি ভবনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। দিল্লি গিয়েও ফিরে আসতে হয় তাঁকে। মাওবাদী-বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব ও ডিজি। সুইডেন, নরওয়ে এবং ইজরায়েলে সাংসদদের শুভেচ্ছা সফরেও দলের কাউকে পাঠাননি মুখ্যমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী না গেলেও রাজ্যের অফিসারেরা জিএসটি পরিষদের বৈঠকে যোগ দেবেন কি না, তা এখনও অজানা। অর্থ দফতর এ জন্য আলাদা করে মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি চাইবে। কর্তাদের যাওয়ার অনুমতিও না পাওয়া গেলে তা কার্যত বৈঠক বয়কটের সামিল হবে বলে মনে করছে প্রশাসনিক মহল। বস্তুত, কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাত যে আরও বাড়বে, এ বারের পরিস্থিতি তার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে কর্তাদের একাংশের মত। কারণ, সংঘাতের আবহেও আগে কখনও জিএসটি-র বৈঠকে অমিতবাবুকে যেতে বারণ করেননি মুখ্যমন্ত্রী। অসুস্থতার কারণে মার্চের বৈঠকে তিনি না গেলেও অর্থ দফতরের কর্তারা গিয়েছিলেন। অমিতবাবু এখনও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের এমপাওয়ার্ড কমিটির চেয়ারম্যান। জিএসটি পরিষদ গঠনের পরে ওই কমিটির তেমন তাৎপর্য না থাকলেও সেটি ভেঙেও দেওয়া হয়নি।

Advertisement

আরও পড়ুন: বিচারপতি কারনানকে ছ’মাসের কারাদণ্ড দিল সুপ্রিম কোর্ট

শ্রীনগরের বৈঠকটির গুরুত্ব অপরিসীম। কোন কোন পণ্যের উপরে কী কী হারে পণ্য পরিষেবা কর(জিএসটি) বসানো হবে, তা ঠিক করতেই ১৮-১৯ মে এই বৈঠক ডেকেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সেখানে থাকার কথা সমস্ত রাজ্যের অর্থমন্ত্রী এবং কর্তাদের।

কাশ্মীরে টানা অশান্তির মধ্যে সেখানে জিএসটি সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণের বৈঠক করার নেপথ্যে ভিন্ন কৌশলও রয়েছে কেন্দ্রের। বরাবর এই বৈঠক দিল্লিতেই হয়। কাউন্সিল তৈরি হওয়ার পরে এক বার বৈঠক হয়েছিল উদয়পুরে। শ্রীনগরে বৈঠকের আয়োজন করে কেন্দ্র আসলে জাতীয় সংহতির বিষয়টিও তুলে ধরতে চাইছে। সমস্ত রাজ্যের অর্থমন্ত্রী এবং আমলারা দু’দিনের বৈঠকে হাজির হলে গোলাবারুদের কাশ্মীরে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া যাবে বলে মনে করছে মোদী সরকার। কিন্তু সেই কাশ্মীরে অর্থমন্ত্রীকে পাঠাচ্ছেন না মমতা। এই সিদ্ধান্ত একই সঙ্গে মোদীর কাশ্মীর-নীতির প্রতি তাঁর অনাস্থার বার্তা কি না, চর্চা চলছে তা নিয়েও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন