পাহাড়ে তাণ্ডব। ফাইল চিত্র।
পাহাড়ে আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে নেপালের মাওবাদী-সহ একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠীর সক্রিয়তা প্রসঙ্গে নিত্যনতুন অভিযোগ পৌঁছচ্ছে নবান্ন ও নয়াদিল্লিতে। তাতে আন্দোলনের নেতাদের কয়েক জনের ভূমিকা নিয়ে পাহাড় ও সমতলের সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যেই ক্ষোভ-বিরক্তি বাড়ছে। এখন তাই দ্রুত আন্দোলনের নিষ্পত্তি চাইছেন পাহাড়ের বিভিন্ন দলের নেতারাই। আলোচনার জন্য ডাক পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তাঁরা। তাতে অন্তত নিজেদের অবস্থার কথা খোলাখুলি বলতে পারবেন। ধোঁয়াশা কমবে বলে তাঁদের আশা।
মোর্চা তো বটেই, জিএনএলএফ-জন আন্দোলন পার্টিও চাইছে আলোচনায় দিল্লির মধ্যস্থতা। জন আন্দোলন পার্টির নেতা হরকাবাহাদুর ছেত্রী, জিএনএলএফের নীরজ জিম্বা কিংবা মোর্চার বিনয় তামাঙ্গ আলাদা ভাবে হলেও বুধবার একই সুরে বলেছেন, ‘‘দিল্লি চাইলেই আলোচনা শুরু হতে পারে। সেই টেবিলে রাজ্য থাকলে কোনও অসুবিধে নেই।’’ সূত্রের খবর, এ ভাবে সুর নরম করার প্রধান কারণ হল পাহাড়ের অনেক নেতারই আশঙ্কা, আর বেশি দিন অস্থিরতা চললে নানা জঙ্গিগোষ্ঠী পরিস্থিতির সুযোগ নিতে আসরে নামবে। নেপালের মাওবাদী নেতা সঙ্কেত গিরি মিরিক-সোনাদা এলাকায় সক্রিয় বলে গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই খবর পেয়েছেন। ইদানীং সুকনা, সোনাদা সহ পাহাড়ে বিক্ষোভ-মিছিলের সময়ে হঠাৎ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: লালুর পর নিশানায় মমতাই
রাজ্যও যে দিল্লিকে আলোচনায় চায়, তেমন ইঙ্গিতও মিলেছে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের কথা হয়েছে। বুধবার রাজ্যের নতুন মুখ্যসচিব মলয় দেদিল্লিতে পৌঁছেছেন। দু’দিন আগেই সেখানে গিয়েছেন ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থও। তাঁদের আলোচনায় পাহাড় প্রসঙ্গ অগ্রাধিকার পাবে
বলেই মনে করছেন মোর্চা, জিএনএলএফের নেতারা।
হরকাবাহাদুর এ দিন খোলাখুলিই বলেন, ‘‘কেন্দ্র মধ্যস্থতা করলেই কথা শুরু হতে পারে।’’ জিএনএলএফের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতাও বলেন, দিল্লি আলোচনার ডাক দিলেই বন্ধ তোলার রাস্তা খুলে যাবে। মোর্চার বিনয় তামাঙ্গর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা হবে না। কিন্তু কেন্দ্র ডাকলে তো যাবই। সেখানে রাজ্য থাকলেও অসুবিধা নেই।’’
তবে মোর্চার একাংশ যে এখনও কড়া আন্দোলনের পক্ষে, তার প্রমাণ মিলেছে মঙ্গলবারও। কালিম্পঙে থানার সামনে মিছিল থেকে পুলিশের ব্যারিকেডে এবং প্রশাসনিক দফতরের সামনে অন্তর্বাস ছুড়ে বিক্ষোভ দেখান নারী মোর্চার সদস্যরা। নতুন করে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।