State News

প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় (১৯২৯-২০১৮)

প্রয়াত লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার তথা সিপিএমের প্রাক্তন সাসংদ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯। সোমবার সকালে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৮ ০৯:১৫
Share:

দীর্ঘ দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়।

প্রয়াত লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার তথা সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯। সোমবার সকাল সওয়া ৮টা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

দীর্ঘ দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন সোমনাথবাবু। দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছাড়াও কিডনি কাজ করা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ডায়ালিসিস চলাকালীনই হৃদ্‌রোগেও আক্রান্ত হন তিনি। এর পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হতে থাকে। বসাতে হয় পেসমেকার।

রবিবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ সোমনাথবাবুর ফের হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন সোমনাথবাবু। এর পর তাঁকে ভেন্টিলেশনে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছিল। তবে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছিলেন সোমনাথবাবু।

Advertisement

আরও পড়ুন
দলের নির্দেশ অমান্য করেছিলেন সংসদীয় দায়িত্ববোধ থেকেই

দেখুন ভিডিয়ো

এর আগেও দীর্ঘ দিন বার্ধক্যজনিত সমস্যায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ১ অগস্ট তিনি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। কিডনির সমস্যায় গত বৃহস্পতিবার তাঁকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। আজ, সোমবার তাঁর ডায়ালিসিস হওয়ার কথা ছিল। এ দিন সকালেই তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এ দিন সকালে মারা যান সোমনাথবাবু।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বরাবরই তাঁর বক্ততা তথা বাচনভঙ্গির জন্য প্রশংসিত হয়েছেন সোমনাথবাবু। ১৯৬৮ সালে সিপিএমে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালে প্রথম বার সাংসদ হয়েছিলেন সোমনাথবাবু। ২০০৮-এ দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রায় ৪০ বছর সিপিএমের সদস্য ছিলেন। এর পর থেকে সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরেই থেকেছেন তিনি। তবে বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর মতামত জানাতে কখনও পিছপা হননি।

আরও পড়ুন
সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল

১০ বারের সাংসদ সোমনাথবাবু জীবনে এক বারই নির্বাচনে হেরেছিলেন। ১৯৮৪-এ যাদবপুর কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পরাজিত হন তিনি। এর পর বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জিতে ফের সাংসদ হন। ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত লোকসভার স্পিকারের দায়িত্ব সামলেছেন সোমনাথবাবু।

সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে দেশের রাজনীতির স্তম্ভ বলে আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে বলেন, “ভারতীয় রাজনীতির স্তম্ভ ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ ও স্পিকার শ্রীসোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্রের ভিত্তিকে আরও সমৃদ্ধ করেছিলেন। সেই সঙ্গে দরিদ্র ও দুর্বলদের মঙ্গলকামনার পক্ষে এক সরব ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে আমি বেদনাহত। তাঁর পরিবার এবং সমর্থকদের পাশে রয়েছি।”

সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর শোকবার্তায় লিখেছেন, “বিশিষ্ট প্রবীণ রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তাঁর প্রয়াণ রাজনৈতিক জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি প্রয়াত শ্রীচট্টোপাধ্যায়ের আত্মীয় পরিজন-সহ তাঁর অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।”

সোমনাথবাবুকে ‘প্রতিষ্ঠান’ হিসাবে উল্লেখ করে রাহুল গাঁধী লিখেছেন, “১০ বারের সাংসদ এবং লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করছি। তিনি নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান ছিলেন। সমস্ত দলের সাংসদের কাছেই শ্রদ্ধার মানুষ ছিলেন। এই শোকের সময়ে তাঁর পরিবারকে আমার সমবেদনা জানাচ্ছি।”

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement