Calcutta High Court

আদালতকক্ষে সৌগতকে ‘কুমন্তব্য’, আইনজীবীকেও মারধর! থানায় অভিযোগ দায়ের কল্যাণের বিরুদ্ধে

হাই কোর্টের আইনজীবী অশোককুমার নাথের সঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। কল্যাণের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:০৩
Share:

(বাঁ দিক থেকে) শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিযোগকারী আইনজীবী এবং দমদমের সাংসদ সৌগত রায়। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী তথা রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন এক আইনজীবী। অভিযোগ, আদালতকক্ষের ভিতরেই ওই আইনজীবীকে মারধর করেছেন কল্যাণ। তৃণমূলেরই দমদমের সাংসদ সৌগত রায়ের বিরুদ্ধে কল্যাণ ‘কুমন্তব্য’ করেছেন বলেও অভিযোগপত্রে দাবি করেছেন ওই আইনজীবী।

Advertisement

অভিযোগকারীর নাম অশোককুমার নাথ। কল্যাণের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, ১২ বছর ধরে হাই কোর্টে আইনজীবী হিসাবে প্র্যাকটিস করছেন অশোক। বৃহস্পতিবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের বেঞ্চে ১১ নম্বর আদালতকক্ষে কল্যাণের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। অশোকের অভিযোগপত্রের বয়ান অনুযায়ী, ‘‘কল্যাণ আদালতকক্ষে প্রবেশ করেন এবং সাংসদ সৌগত রায়ের বিরুদ্ধে কুমন্তব্য করতে শুরু করেন। আমি তাঁকে বলি, আদালতকক্ষের মধ্যে এ সব না করতে। তিনি এতে রেগে যান এবং আমার কলার ধরে মারধর করেন। আমার মুখে ঘুষি মারেন, লাথি মারেন। আমার মুখ থেকে রক্ত পড়ছিল। কল্যাণ আমার বিরুদ্ধেও কুমন্তব্য করেন। অন্যেরা ওঁকে না আটকালে আমাকে উনি মেরেও ফেলতে পারতেন।’’

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অভিযোগকারী বলেন, ‘‘আমি সৌগত রায়ের সমর্থক। তাঁর সংসদীয় এলাকার বাসিন্দা। সে দিন ১১ নম্বর আদালতকক্ষে কল্যাণ ছিলেন। নরেন্দ্র মোদীর আমলে জঙ্গি হামলা নিয়ে বাকিদের সঙ্গে উনি কথা বলছিলেন। আমি শুধু সেখানে বলেছিলাম, আপনি সৌগতদার নামে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন কেন? তখনই উনি হিংসাত্মক হয়ে ওঠেন এবং আমাকে আক্রমণ করেন। আমাকে সৌগতের চামচা বলেন। আমার গাল থেকে রক্ত পড়ছিল। এখনও সেই দাগ আছে। আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। আদালতেও জানিয়েছি। আর যেখানে যেখানে জানানো দরকার, আমি জানাব। আদালতের মধ্যে একজন বর্ষীয়ান আইনজীবীর এই ধরনের আচরণ কাম্য নয়।’’

Advertisement

উল্লেখ্য, একই দলের সাংসদ হলেও সৌগত এবং কল্যাণের ‘মধুর’ সম্পর্ক তৃণমূলের অন্দরে কারও অজানা নয়। একাধিক বার প্রকাশ্যেই দুই নেতা একে অপরকে আক্রমণ করেছেন। তাঁদের মতপার্থক্যের ফলে বার বার অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে দলকে। অতীতে সৌগতকে ‘চোর’ বলেও কটাক্ষ করেছেন কল্যাণ। পাল্টা কল্যাণকে ‘ব্যর্থ আইনজীবী’ বলেন দমদমের সাংসদ। বৃহস্পতিবার আদালতে দুই বর্ষীয়ান নেতার এই বিবাদের প্রসঙ্গই উঠেছিল। তার পর আইনজীবীর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন কল্যাণ।

কল্যাণের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। আনন্দবাজার ডট কমকে কল্যাণ বলেন, ‘‘আমি কাল কোর্টে বসেছিলাম। ওই আইনজীবী পাশ থেকে আমাদের দলের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয় নিয়ে মন্তব্য করছিলেন। আমি ওঁকে বলি, এটা আলোচনার জায়গা নয়। কিন্তু উনি বলেই চলেন। আমাকে প্ররোচনা দেওয়া হয়। তখন আমি ওঁকে ঠেলে সরিয়ে দিই। মারধর করেছি এসব ফালতু কথা।’’ কল্যাণ আরও বলেন, ‘‘ওঁকে হাওয়া দিয়েছেন বিজেপির কিছু লোক। তাঁদের মধ্যে এক জন বার কাউন্সিলের ভোটে দাঁড়িয়ে হেরেছিলেন। সেই তিনিই যখন সুইৎজ়ারল্যান্ডে পাসপোর্ট হারিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন, বিজেপির ওই আইনজীবীকে আমি উদ্ধার করেছিলাম।’’


আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement