বেনিয়মই নিয়ম, অভিযুক্ত ব্লাডব্যাঙ্ক

সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মী এবং টেকনিশিয়ানদের একটা বড় অংশ কিন্তু অন্য কথা বলছেন। এক টেকনিশিয়ানের কথায়, ‘‘২৪ ঘণ্টা রক্ত পরীক্ষা হওয়ার কথা। কিন্তু কিডনি, ক্যানসার, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের রক্ত দেওয়ার আগে একটা বিশেষ পরীক্ষা করতে হয়।

Advertisement

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০১৭ ০৬:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

কোন্নগরের হাসপাতালে এক সপ্তাহ ধরে ভর্তি ৩৯ বছরের সুস্মিতা মজুমদার। কিডনির সমস্যা। প্লেটলেট প্রয়োজন ছিল দু’ইউনিট। গত শনিবার সন্ধ্যায় প্রয়োজনীয় কাগজ নিয়ে মানিকতলায় সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কে যান তাঁর পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, কাউন্টার থেকে বলে দেওয়া হয়, যে মেশিনে প্লেটলেট তৈরি করা হয় তা সন্ধে ছ’টার পরে চলে না। ফলে সকালে আসতে হবে!

Advertisement

পূর্বাঞ্চলের মডেল ব্লাড ব্যাঙ্কে কেন ২৪ ঘণ্টা এই সুবিধা থাকবে না তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ওই পরিবার। অভিযোগ, ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা তাঁদের জানান, চাপ দিলে তাঁরা পরীক্ষা করে দিতে পারেন, কিন্তু সেই রিপোর্টের যথার্থতার নিশ্চয়তা থাকবে না। স্তম্ভিত পরিবার বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছেন। সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কের অধিকর্তা কুমারেশ হালদার অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চাননি। বিষয়টি শুনে তিনি উত্তেজিত ভাবে বলেন, ‘‘সব মিথ্যে। আপনারা বানিয়ে বলছেন। ইচ্ছে করে আমার নাম খারাপ করার চক্রান্ত চলছে।’’

আরও পড়ুন: প্লাবিত উত্তরে মৃত্যু আরও চার জনের

Advertisement

সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মী এবং টেকনিশিয়ানদের একটা বড় অংশ কিন্তু অন্য কথা বলছেন। এক টেকনিশিয়ানের কথায়, ‘‘২৪ ঘণ্টা রক্ত পরীক্ষা হওয়ার কথা। কিন্তু কিডনি, ক্যানসার, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের রক্ত দেওয়ার আগে একটা বিশেষ পরীক্ষা করতে হয়। সেটা করতে ঘন্টা তিনেক সময় লাগে। রাতে আমাদের এত কর্মী থাকেন না যে একটা পরীক্ষা এত ক্ষণ ধরে করা হবে। কর্তৃপক্ষ সেটা জানেন।’’

সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা আরও জানিয়েছেন, সেখানে এখন কোনও অ্যান্টিবডি পরীক্ষা হয় না। রক্ত দেওয়ার আগে বাধ্যতামূলক ভাবে যে পাঁচটি পরীক্ষা করতে হয় সেগুলিও এলাইজা মেথ়ডে হয় না। কোনও মতে ‘স্পট টেস্ট’ করে দেওয়া হয়। কারণ এলাইজা কিটেরও অভাব ঘটছে মাঝেমধ্যেই।

কিছু দিন আগেই এই ব্লাড ব্যাঙ্ক নিয়ে কড়া রিপোর্ট দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোলের পরিদর্শকেরা। তার পরেও অবস্থা শোধরানোর কোনও চেষ্টাই কর্তৃপক্ষের নেই বলে অভিযোগ এনেছেন ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীদেরই একটি বড় অংশ।

রক্ত সুরক্ষা নিয়ে কেন এমন টালবাহানা চলছে? স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা এর উত্তরে সরাসরি কিছু বলতে চাননি। এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘প্রচুর অভিযোগ আসছে। আমরা নজর রাখছি। শীঘ্রই এ ব্যাপারে বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন