জেলে বিজ্ঞান পড়ার পথে কাঁটা বন্দিনীর

জুনে রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেন ঠাকুরমণি মুর্মু ওরফে তারা। অক্টোবরে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, প্রায় ৮৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন তিনি।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:২৭
Share:

তারার তারা-প্রাপ্তি হয়েছিল। অথচ তাঁরই নাকি বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চশিক্ষার পথে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এমনটাই অভিযোগ তারার ঘনিষ্ঠদের।

Advertisement

জুনে রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেন ঠাকুরমণি মুর্মু ওরফে তারা। অক্টোবরে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, প্রায় ৮৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন তিনি। তার মধ্যে ইংরেজি ও ইতিহাস বাদে বাকি পাঁচটি বিষয়ে লেটার পান দমদম সেন্ট্রাল জেলের বন্দিনী ঠাকুরমণি। বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন একদা শালবনি স্কোয়াডের ওই মাওবাদী নেত্রী। কিন্তু তাঁর বিজ্ঞান পড়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ ঘনিষ্ঠদের। জটিলতা এতটাই যে, উচ্চ মাধ্যমিকে এখনও ভর্তি হতে পারেননি বিনপুরের দহিজুড়ির কুসুমডাঙার বাসিন্দা ঠাকুরমণি। তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিষয়েই ভাল নম্বর পেয়েছেন ঠাকুরমণি। তাই বিজ্ঞান পড়তে চেয়েছেন। একদা মাওবাদী নেত্রীর পরবর্তী পড়াশোনা নিয়ে জটিলতার অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে কারা দফতর। কারা সূত্রের খবর, ঠাকুরমণির পরবর্তী পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

ঠাকুরমণি পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইলে ওসি অপহরণ, শিলদার ইএফআর ক্যাম্পে হামলা-সহ বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত। বছর দেড়েক আগে তাঁকে পাঠানো হয় দমদম জেলে। ছবি আঁকা, গানের পাশাপাশি নাচেও আগ্রহী হয়ে ওঠেন একদা মাওবাদী মিলিটারি কমিশনের রাজ্য সম্পাদক মনসারাম হেমব্রম ওরফে বিকাশের স্ত্রী ঠাকুরমণি।

Advertisement

কোনও বন্দি বিজ্ঞান নিয়ে পড়লে তাঁকে নিয়মিত প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসও করতে হবে। ঠাকুরমণি বিজ্ঞান নিয়ে পড়লে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসের জন্য তাঁকে নিয়ে যেতে হবে জেলের বাইরে। ফলে তাঁর জন্য বাড়তি সময় ব্যয় করতে হবে জেল-কর্তৃপক্ষকে। সেই জন্যই ঠাকুরমণির বিজ্ঞান পড়া নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে বলে তাঁর ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ। এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের রঞ্জিত শূর বলেন, ‘‘কারা দফতরের খাতায় জেল এখন সংশোধনাগার। আর পড়াশোনা তো সংশোধনের অন্যতম মাধ্যম! কিন্তু সেখানেও বন্দিদের পড়াশোনা অবহেলিত হচ্ছে। অর্ণব দামের নেট পরীক্ষার সময় সেই অবহেলা দেখা গিয়েছিল। ঠাকুরমণির ক্ষেত্রে একই ভাবে পড়াশোনা নিয়ে জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন