আমেরিকার ৩৬তম প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন বলেছিলেন: কেউ আমার তাঁবুর বাইরে থেকে তাঁবুটা নোংরা করার চেয়ে আমি চাইব, তাঁবুর ভিতরে থেকে যেন বাইরেটা নোংরা করে।
একই বার্তা এ দেশের মহাকাব্যেও। শত্রু শিবিরে ভিড়ে বিভীষণ বিপদ বাড়িয়েছিল দাদা রাবণের। ঘরশত্রুকে পেয়ে সুবিধেই হয়েছিল রামের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন মুকুল রায় তৃণমূলেই থাকুন। সম্ভবত তাই পূর্ব মেদিনীপুরের জনসভা থেকে শুরু করে বন্যা পরিদর্শনে মুকলকে সঙ্গে রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পুরোপুরি উল্টো কারণে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ কিন্তু ঘরেই দেখতে চান ‘ঘরশত্রুকে’। তিনি মনে করছেন, তৃণমূলে থেকেই তৃণমূলের যতটা সর্বনাশ মুকুল করতে পারেন, ততই বিজেপির লাভ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও চান না মুকুল বিজেপিতে আসুন। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব মুকুলকে তখনই দলে নিতে রাজি হবেন, যখন তিনি তৃণমূল বিধায়ক-সাংসদদের বড় অংশকে বিজেপিতে সামিল করতে পারবেন।
কিন্তু এখন পর্যন্ত মুকুলের নেতৃত্বে তৃণমূল ভাঙার সম্ভাবনা খুবই কম। আর তাই মুকুল এখন নিজেই গভীর সঙ্কটে। ‘একুল-ওকুল দুকুল গিয়েছে মুকুলের’— এমনটাই মনে করছেন তৃণমূলের একাংশ নেতা।
আরও পড়ুন:পাহাড়ে জোড়া বিস্ফোরণে খটকা অনেক
বেশ কিছু দিন ধরে মুকুলকে অক্সিজেন জোগাচ্ছিল বিজেপি। শোনা যাচ্ছিল, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, রাম মাধবের সঙ্গে দেখা করেছেন মুকুল। এমনও রটে যে, তিনি গুজরাতে গিয়ে গোপনে অমিতের সঙ্গেও দেখা করেছেন। মমতার কাছে মুকুল এর সত্যতা অস্বীকার করেছেন। প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘‘দলনেত্রীর উপর পূর্ণ আস্থা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার প্রশ্নই নেই।’’
নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত মুকুল-সহ বাকি ছ’জনকে পুজোর আগেই জেরা করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। কিন্তু জেরার থেকে মুকুলকে আলাদা রাখতে তলে-তলে উদ্যত বিজেপি। তবে শুধু মুকুলকে না ডাকা হলে বিতর্ক তৈরি হবে। তাই পুরো প্রক্রিয়াটাই পিছিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। তবে তদন্তের খাঁড়া ঝুলছেই।
তৃণমূলের এক নেতা তো বলেই দিলেন, ‘‘মুকুল এখন ভ্যানিশ!’’ তাঁর মতে, মুকুলের এখন, ‘জুড়াইতে চাই, কোথায় জুড়াই’ দশা!