সংসদে কংগ্রেসের সঙ্গে সহযোগিতা না-করার যে হুমকি মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন, তাকে অন্তত প্রকাশ্যে আমল দিচ্ছে না প্রদেশ কংগ্রেস। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের বক্তব্য, ‘‘জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেস কখনওই তৃণমূলের মুখাপেক্ষী নয়। উনি ২০১২ সালে ইউপিএ-২ ছাড়ার পরেও সরকার পড়ে যায়নি।’’
এ দিন বাম ও কংগ্রেস বিধায়কেরা এক জোট হয়ে বিধানসভা বয়কট করায় ক্ষুব্ধ মমতা দাবি করেন, তৃণমূল কখনও অধিবেশন বয়কট করেনি। পাশাপাশি পুরনো দিনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘‘আমি বিরোধী দলের ঘরে (বিধানসভায়) গিয়েছিলাম বলে বাম আমলে আমাদের ১৯ জন বিধায়কের মাইনে কেটে নিয়েছিল! পার্থদাকে বলেছি, ওরা ভুল করলেও আমরা সেই পথে যাব না।’’
এ প্রসঙ্গেও মমতাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন মান্নান। ২০০৬ সালের ৩০ নভেম্বর মমতার উপস্থিতিতে বিধানসভার লবিতে তৃণমূল বিধায়করা ভাঙচুর করেছিলেন বলে জানিয়ে মান্নানের দাবি, তৃণমূল বয়কট-ভাঙচুর করেনি প্রমাণ করতে পারলে তিনি বিরোধী দলনেতার পদ ছেড়ে দেবেন! মান্নানের সুরেই বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘তৃণমূল যত বন্ধ-অবরোধ-ভাঙচুরের রাজনীতি করেছে, ওঁর সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীরা কখনও তা করেনি।’’
তবে মমতার এই আক্রমণ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত রাজনীতিকদের একাংশ। এ দিন কংগ্রেসকে আক্রমণ করার আগেই মুখ্যমন্ত্রী বিমানবন্দরে বিদায় জানাতে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে। তাঁর সরকারের দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনা নিতে রাজি হওয়ায় রাষ্ট্রপতির প্রতি তিনি যে কৃতজ্ঞ, সে কথাও সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্টো দিকে, মমতার মমতার নাক কাটার হুমকি দেওয়া হরিয়ানার সেই নেতাকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে বিজেপি-ও। এই ঘটনাপ্রবাহ নেহাতই কাকতালীয় কি না, প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।