চাপাবেন না আপস, বার্তা কংগ্রেসের

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সখ্য বাড়াচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল ভবনে শুক্রবারই দলের কোর কমিটির বৈঠকে মমতা বলেছেন, বিজেপি এবং সিপিএম সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ করলে জবাব দিতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০৩:৪০
Share:

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সখ্য বাড়াচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল ভবনে শুক্রবারই দলের কোর কমিটির বৈঠকে মমতা বলেছেন, বিজেপি এবং সিপিএম সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ করলে জবাব দিতে হবে। কংগ্রেসটা তিনি বুঝে নেবেন। কিন্তু রাজ্যসভার ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার প্রস্তাব এখনও মেনে নিতে রাজি নয় প্রদেশ কংগ্রেস। প্রদেশ নেতৃত্ব বরং দলের হাইকম্যান্ডের সঙ্গে কড়া দর কষাকষির পথে যাচ্ছেন।

Advertisement

বিধান ভবনে শুক্রবার প্রথমে প্রদেশ কংগ্রেসের এবং পরে বিধানসভায় পরিষদীয় দলের বৈঠকে রাজ্যসভার প্রসঙ্গ উঠেছিল। দু’টি বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন রাজ্যে সাংগঠনিক নির্বাচনের ভারপ্রাপ্ত পিআরও, এপিআরও-সহ এআইসিসি-র তিন প্রতিনিধি। তাঁদের সামনেই প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তী সওয়াল করেন, বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধীদের চেয়ে তৃণমূল ৩০ লক্ষ ভোট বেশি পেয়েছিল। রাজ্যের ৭৭ হাজার বুথে ভাগ করলে সেই ব্যবধান এমন কিছু দাঁড়ায় না। তা হলে এত অনাচার-অত্যাচারের পরেও কেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া হবে? পরে পরিষদীয় দলের বৈঠকে একই মত ছিল অধিকাংশ বিধায়কের। তার প্রেক্ষিতে কংগ্রেস বিধায়কদের সই করা একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর কাছে। যেখানে বলা হয়েছে, বিধায়কদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই যেন রাজ্যসভার বিষয়ে এআইসিসি সিদ্ধান্ত নেয়।

আরও পড়ুন: অসুস্থ বলে সুদীপকে জামিন ভুবনেশ্বর হাইকোর্টের

Advertisement

বস্তুত, তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা থেকে এআইসিসি-কে নিরস্ত করতে প্রদেশ কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতাই দলের অন্দরে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলে রেখেছেন, হাইকম্যান্ড তৃণমূলের হাত ধরতে চাইলে তাঁদের সামনে বিকল্প রাস্তা খোলা আছে। পরিষদীয় দলের বৈঠকে এ দিনই রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন, প্রদেশ সভাপতি হয়েও অধীরবাবু কী ভাবে বিজেপি-তে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন? ফরাক্কার বিধায়ক মইনুল হকের সঙ্গে সমরবাবুর বিতণ্ডা থামান অধীরবাবুই। কিন্তু বৈঠকে প্রদেশ সভাপতি বলেন, তিনি গেলে সকলকে বলেই যাবেন! যাতে দলে জল্পনা আরও বেড়েছে। আবার রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে আব্দুল মান্নান বলে এসেছেন, তৃণমূলের হাত ধরতে বললে তিনি পদ ছেড়ে বসে যাবেন। পরিষদীয় বৈঠকেও বিরোধী দলনেতার যুক্তি, কংগ্রেস যখন নিজের শক্তিতেই এক জন প্রার্থীকে রাজ্যসভায় জেতাতে পারবে, তা হলে আর সমঝোতার প্রশ্ন উঠছে কেন?

প্রশ্নের জবাবে অধীরববাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের বাস্তবতা রাজ্যের কংগ্রেস ভাল করে জানে। বিধায়কদের মত না নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত যাতে দিল্লি না নেয়, লিখিত ভাবে আমরা তা জানিয়ে দিচ্ছি।’’ কংগ্রেসের প্রতি মমতার নরম হওয়ার বার্তা প্রসঙ্গেও অধীরবাবুর বক্তব্য, ‘‘ওঁর দরকার হলে বিজেপি-র সঙ্গে সরকারে থাকেন। আবার দরকার হলে কংগ্রেসের প্রতি নরম হওয়ার কথা বলেন। ওঁর কখন কী মনে হবে, তা দেখে আমরা চলব কেন?’’ তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে আগামী দিনে পঞ্চায়েত-সহ স্থানীয় নির্বাচন বয়কট করার ভাবনাও রয়েছে কংগ্রেসে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন