Subhas Chandra Bose

নেতাজি স্মরণে মিলে গেল বাম ও কংগ্রেস

স্বাধীনতা আন্দোলনের উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক এবং দলের প্রাক্তন সভাপতি সুভাষের ১২৪তম জন্মদিন পালনের জন্য বিধান ভবনে আলাদা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল প্রদেশ কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ০১:২৮
Share:

সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে নেতাজি জয়ন্তী অনুষ্ঠানে

ব্রিটিশ আমলে জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি থাকার সময়ে মতবিরোধের জেরে দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। গঠন করেছিলেন নতুন দল ফরওয়ার্ড ব্লক। সেই নেতাজি স্মরণকে উপলক্ষ করেই এক মঞ্চে, এক সুরে মিশে গেলেন ফ ব-সহ বাম এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব।

Advertisement

স্বাধীনতা আন্দোলনের উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক এবং দলের প্রাক্তন সভাপতি সুভাষের ১২৪তম জন্মদিন পালনের জন্য বিধান ভবনে আলাদা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল প্রদেশ কংগ্রেস। কিন্তু বামেরা তাদের নেতাজি জয়ন্তী উদযাপন করেছে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়েই। দু’পক্ষের নেতারাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে নেতাজির ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে স্মরণ করেছেন। দাবি উঠেছে ২৩ জানুয়ারিকে ‘দেশপ্রেম দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার। সমালোচনা হয়েছে নেতাজি সুভাষ ডকের উপরে গোটা কলকাতা বন্দরের নামকরণ শ্যামাপ্রসাদের নামে হওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারি সিদ্ধান্তেরও।

রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে বৃহস্পতিবার নেতাজি জয়ন্তী কমিটির আয়োজনে সভায় বাম আমন্ত্রণ স্বীকার করে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। বামফ্রন্ট এবং সহযোগী মিলে ১৭ দলের নেতাদের সঙ্গে নেতাজি স্মরণের পরে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে রেড রোডে নেতাজি মূর্তি পর্যন্ত মিছিলও হয় যৌথ ভাবেই। পরে বিধাননগরের বিদ্যুৎ ভবনে ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত শতবর্ষ উদযাপন কমিটির উদ্যোগে আলোচনা-সভার মঞ্চেও নেতাজিকে স্মরণ করেন সিপিআইয়ের কানহাইয়া কুমার, সিপিএমের মহম্মদ সেলিম, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, কংগ্রেসের সোমেনবাবু ও প্রদীপ ভট্টাচার্য। কানহাইয়া সেখানে বলেন, ‘‘কোনও ধর্মের, কোনও বিশ্বাসের মানুষের যাতে অসুবিধা না হয়, সে কথা মাথায় রেখেই নেতাজির আজ়াদ হিন্দ ফৌজ ‘জয়হিন্দ’ ধ্বনি দিয়েছিল।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘নেতাজি থেকে ক্ষুদিরাম বসু বা অগণিত স্বাধীনতার যোদ্ধা এবং এখনকার ঐশী ঘোষ— বাংলার মাটিতে প্রতিবাদের অদ্ভুত গুণ আছে। বিহার এক কালে অবিভক্ত বাংলার অংশ ছিল বলে গর্ব বোধ করি।’’ সেলিম বলেন, সাম্প্রদায়িকতার বীজ পুঁততে সিদ্ধহস্ত সঙ্ঘ-বিজেপির কোনও অধিকারই নেই নেতাজির নাম করার।

Advertisement

বিধান ভবনে নেতাজি স্মরণ

বিধান ভবনেও ‘নেতাজি ও ধর্মনিরপেক্ষতা’ বিষয়ে বক্তৃতা করেন গাঁধী স্মারক সংগ্রহালয়ের প্রাক্তন অধিকর্তা সুপ্রিয় মুন্সী। হাজির ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। হেমন্ত বসু ভবনে ফ ব-ও দলীয় স্তরে নেতাজি স্মরণের আয়োজন করেছিল। বাম ও কংগ্রেস প্রভাবিত নানা সংগঠনও নেতাজির জন্মদিন উদযাপন করেছে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে। যেমন, নাকতলার জোড়াবাগান রোডে একটি সংগঠনের উদ্যোগে নেতাজি জয়ন্তী পালনে অংশগ্রহণ করেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী, আরএসপি-র কলকাতা জেলা সম্পাদক দেবাশিস মুখোপাধ্যায়, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক জগৎ থেকে সুদেষ্ণা রাই, পাপিয়া দেবরাজন, দেবদূত ঘোষ প্রমুখ। কলকাতা পুরসভার কাছে বাম গণ-সংগঠনগুলির অবস্থান-মঞ্চেও শ্রদ্ধা জানানো হয় নেতাজিকে। বিধানসভায় নেতাজি স্মরণে অবশ্য স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ছাড়া কাউকে দেখা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন