মধ্যমগ্রামে গৌতম খুনে ভাড়াটে ঘাতক

গৌতম খুনে ধৃত কুরু ওরফে অরূপ বসুকে শনিবার বারাসত আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। তাকে জেরার পরে পু‌লিশের দাবি, কুরুই এই খুনে ‘ট্রিপার’এর (গৌতমকে চিনিয়ে দেওয়া) কাজটি করেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:১২
Share:

মধ্যমগ্রামে পদ’র বাগানবাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

মধ্যমগ্রামে গৌতম দে সরকার ওরফে ঢাকাই গৌতমকে খুন করতে কাজে লাগানো হয়েছিল ভাড়াটে খুনিদের। পুলিশ সূত্রের খবর, তারা ভিন রাজ্যের।

Advertisement

গৌতম খুনে ধৃত কুরু ওরফে অরূপ বসুকে শনিবার বারাসত আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। তাকে জেরার পরে পু‌লিশের দাবি, কুরুই এই খুনে ‘ট্রিপার’এর (গৌতমকে চিনিয়ে দেওয়া) কাজটি করেছিল। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘কুরুকে জেরা চলছে। একটি বাগানবাড়িতে তল্লাশি চলছে।’’

প্রাথমিক তদন্তের পর পু‌লিশের দাবি, মধ্যমগ্রাম স্টেশনের কাছে পদ’র (প্রদীপ দেব, বছর খানেক আগে জেলে-ই মৃত) বাগানবাড়িতে তার ভাগ্নে, অন্যতম অভিযুক্ত টুবাই মোদক-সহ অনেকে রাত পর্যন্ত ছিল। সেখানে খানাপিনার সময় খুনের ছক করা হয়। দুষ্কৃতী-দলে ছিল ভাড়াটে খু‌নিরাও। ওই রাতে ফো‌ন করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সকালেই চলে আসতে বলা হয় মধ্যমগ্রাম স্টেশনের কাছে। সেই মতো সকালে প্রথমে গৌতমের বাড়ি যায় কুরু। সেখানে তাঁকে না পেয়ে বঙ্কিমপল্লির সেলুনে আসে। সেখানে গৌতমকে দেখার পরে ফোনে তা জানিয়ে দেয় সে। তারপর চারটি মোটরবাইকে দুষ্কৃতীরা জড়ো হয় সেলুনের সামনে।

Advertisement

কুরুকে জেরায় জানা গিয়েছে, সেলুনে ঢুকে গৌতমের সঙ্গে মধ্যমগ্রাম-সোদপুর রোডের বন্ধ একটি সিনেমা হলের জমি কেনাবেচা নিয়ে কথা শুরু করে ভাড়াটে খুনিরা। গৌতমের সম্ভবত সন্দেহ হয়েছিল। সে ফোন করে ভাই কার্তিককে ডেকে আনে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ভাড়াটে খুনিরা প্রথমে ভুল করে কার্তিককে নিশানা করে। তখন গৌতমকে চিনিয়ে দেয় কুরুই।

মধ্যমগ্রাম পুরসভায় ২২ নম্বর ওয়ার্ডের দেবীগড় ঝিলপাড় শনিবার বিকেল ৪টেতেই সুনসান। দোকানপাট বন্ধ। পদ’র বাগানবাড়ি কোনটা, প্রশ্ন করলেই মুখ ঘুরিয়ে ত্রস্ত পায়ে চলে গেলেন এক মহিলা। পরে শিয়ালদহ-বারাসত শাখার ৯ নম্বর রেলগেটের পূর্ব দিকে রেললাইনের পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, গাছগাছালিতে ভরা বিঘে খানেক এলাকার মধ্যে একতলা একটি পুরনো বাড়ি। চারদিকে উঁচু পাঁচিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘বছর দশেক আগে এক জনের কাছ থেকে জোর করে এই বাগানবাড়ি ওরা কেড়ে নেয়। অন্য বাগানবাড়ির মতো কাউকেই ভাড়া দেওয়া হয় না এই বাড়ি। রাতবিরেতে অনেক অচেনা মানুষ মোটরসাইকেল, গাড়িতে এখানে ঢোকে। অনেক রাত পযন্ত হই-হুল্লোড় হয়। বাড়িতে অনেকগুলো কুকুরও আছে।’’ তারপরেই তাঁর দাবি, ‘‘মাঝেমধ্যে ভিআইপিদের গাড়িও গেটের বাইরে থাকে।’’ আর বাগানবাড়ির পাশের আবাসনের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘কাল সারা রাত অনেক পুলিশ বাগানবাড়ি ঘিরে ফেলেছিল। পাঁচিল ডিঙিয়ে ঢুকেছে, বেরিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন